ওয়েনাড় (কেরল): একইদিনে সোনিয়া-রাহুল-প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ‘ত্রিশূল’ খোঁচা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi)। ‘বিজেপি (BJP) আমাকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। ওরা আমার ঘর কেড়ে নিতে পারে। আমাকে জেলে ভরতে পারে। কিন্তু, এমপি কিংবা লোকসভার সদস্য তো কেবলমাত্র একটা পদের টিকা। ওরা আমাকে ওয়েনাড়ের (Wayanad) মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা থেকে রুখতে পারবে না। এখানকার মানুষের সমস্যা নিয়ে আমি আগেও যেমন সরব ছিলাম, এখনও থাকব। বিজেপি আমাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।’ মঙ্গলবার নিজের পুরনো লোকসভা কেন্দ্র ওয়েনাড়ের কালপেট্টা শহরে ‘সত্যমেব জয়তে’ (Satyameva Jayate) নামে এক রোড শো করে দলের শক্তি ও নিজের জনপ্রিয়তার প্রদর্শন করলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও (Priyanka Gandhi Vadra)।
আরও পড়ুন: Government App Cab | সরকার এবার অ্য়াপ ক্য়াব পরিষেবায় নামছে
মঙ্গলবার ভোরের আলো ফুটতেই একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত হয় কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) একটি নিবন্ধ। ছেলে রাহুল গান্ধীর লোকসভা সদস্যপদ খারিজের পর এই প্রথম সরব হন সোনিয়া গান্ধী। তারপরই দুপুরে ওয়েনাড়ের প্রাক্তন সাংসদ রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা মিলে এক পদযাত্রা ও সমাবেশে যোগ দেন। সাংসদ পদ খারিজের পর এই প্রথম ওয়েনাড়ের মানুষের কাছে জনরায় নিতে দেখা গেল রাহুলকে। এদিনের রোড শোয়ে বিশাল জনসমাগম হয়। হাজার হাজার মানুষ রাহুল-প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে পথ হাঁটেন।
সেখানেই ওয়েনাড় ও দেশবাসীকে বার্তা দিতে নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপিকে বাক্যবাণে বিঁধলেন তাঁরা। রাহুল বলেন, তাঁর নামের আগে এমপি তকমা সরিয়ে ফেলা সহজ। কিন্তু, তাতে মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার কাজ ঠেকিয়ে রাখা যায় না। তার অর্থ অনেক বড়। সাংসদ তো একটা পদ মাত্র। সেটা কেড়ে নিতে পারে বিজেপি, আমার বাড়ি ছিনিয়ে নিতে পারে। আমাকে জেলে পুরে দিতে পারে। কিন্তু, মানুষের কাছ থেকে সরাবে কী করে?
আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি, এত বছর পরেও বিজেপি শত্রু চিনতে শিখল না! ওরা বোঝে না যে শত্রুকে আগেভাগে সজাগ করে দিতে নেই। ওরা মনে করে, আমার বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে দিলে আমি ভয় পেয়ে যাব। আমার বাড়ি কেড়ে নিলে আমি বিপদে পড়ব। এদিনের রোড শোয়ে হাজার হাজার আবালবৃদ্ধবনিতা যোগ দেন। কেরলের (Kerala) কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ (UDF) কর্মীরা জাতীয় পতাকা হাতে মিছিলে হাঁটেন। রাহুল ও তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা একটি ট্রাকে করে সভামঞ্চের দিকে যান।
প্রিয়াঙ্কা বলেন, রাহুল গান্ধীর সদস্যপদ খারিজ করার কারণ হল, ওর প্রশ্নের উত্তর বিজেপির কাছে নেই। গোটা সরকার প্রথম থেকে গৌতম আদানিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী আদানিকে রক্ষা করছেন। মোদি রোজ নতুন নতুন পোশাক পরেন। কিন্তু দেশের মানুষের দিন বদল হয় না। তারা একটা কাজের জন্য রোজ লড়াই চালাচ্ছে। রাহুলের তুঘলক রোডের সরকারি বাংলো ছাড়ার প্রসঙ্গে প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমি রাহুলের জিনিসপত্র গোছগাছ করে দিচ্ছি। আমার ভাইয়ার পরিবার নেই, তাই ও আমাদের উপর ছেড়ে দিয়েছে।
প্রিয়াঙ্কা আরও বলেন, আমার ভাইয়া সৎ এবং সাহসী। এর আগে আমি যখন ওয়েনাড়ে এসেছিলাম তখন রাহুল সম্পর্কে এখানকার মানুষকে অনেক কিছু বলেছিলাম। আজ জানি ওয়েনাড়ের মানুষকে রাহুল সম্পর্কে কিচ্ছু বলার নেই। যারা ওর মুখ বন্ধ করতে চায়, তাদের চাপের কাছে মাথা নোয়ানোর পাত্র নয় ও।