নয়াদিল্লি: দিল্লির প্রাসাদোপম আইটিসি মৌর্য শেরাটন হোটেল রাজকীয় সাজে সেজে উঠছে। কারণ জি ২০ সম্মেলনে যোগ দিতে এই হোটেলেরই চোদ্দতলায় এসে উঠবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর এয়ারফোর্স ওয়ানে চেপে দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ নেমে সোজা হোটেলে চলে যাবেন বাইডেন। তাঁর নিরাপত্তার জন্য আসছে আমেরিকান সিক্রেট সার্ভিসের কমান্ডোরা। তারা শেরাটনের প্রতিটি তলায় পাহারায় থাকবে। বাইডেন ও মার্কিন অতিথিদের জন্য ৪০০ ঘর বুক করা হয়েছে। বিশেষ একটি লিফ্ট থাকবে শুধুমাত্র বাইডেনের জন্য।
হোটেলের চোদ্দ তলার ছোটখাট মহলের মতো স্যুইটটির নাম গ্র্যান্ড প্রেসিডেন্সিয়াল চাণক্য। সেখানে সোনা-রুপোর ফুলদানি থেকে বিভিন্ন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পীদের ছবি দিয়ে সাজানো চলছে। তিনদিন এই স্যুইটে থাকবেন বাইডেন, দিনপ্রতি যার ভাড়া ৮-১০ লক্ষ টাকা। বাইডেনের পছন্দমতো খাবার তৈরি করতে দেশের খ্যাতনামা রাঁধুনিদের আনা হচ্ছে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই আসছে হোয়াইট হাউসের শেফও।
আরও পড়ুন: প্রথমবার ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের প্রধান হচ্ছেন এক মহিলা
আগামী ৩-৪ তারিখের মধ্যেই দিল্লিতে চলে আসার কথা সিআইএ এবং এফবিআইয়ের অফিসারদের। ওইদিন থেকেই হোটেল সম্পূর্ণভাবে মার্কিন এজেন্সিদের হাতে চলে যাবে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।
জি ২০ সম্মেলনকে ঘিরে রাজধানী দিল্লি কনের সাজে সেজে উঠছে। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’এর মূল সুরে আয়োজনের চূড়ান্ত পর্ব চলছে। আগামী ৯ এবং ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের পৌরোহিত্যে এই সম্মেলনে হাজির থাকবেন বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতারা। সম্মেলন উপলক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলে আসছেন ৭ তারিখেই। তাঁর থাকার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে আইটিসি মোর্য হোটেলে। চীনা প্রেসিডেন্ট থাকবেন তাজ প্যালেসে। বিদেশি অতিথিদের জন্য মোট ৩০টি হোটেল ভাড়া নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও আসবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তথা ভারতের জামাই ঋষি সুনক। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট য়ুন সুক ইয়ল, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, তিনি ক্ল্যারিৎজ হোটেলে থাকবেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জন্য তাজ হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে আসবেন ৪৬টি গাড়ি। উল্লেখ্য, জি ২০ বৈঠকের আগেই চীন যে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে সেখানে অরুণাচলের একটি অংশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে তারা। তাই নিয়ে সম্মেলনের আগেই দুদেশের সম্পর্কে তিক্ততা শুরু হয়ে গিয়েছে। ভারতের তরফ থেকে এর তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানেজ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আসছেন সম্মেলনে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি বৈঠকের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি আসতে পারবেন না। তাঁর জায়গায় রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করবেন বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পুতিন এই বৈঠকে হাজির থাকবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ ইউক্রেনে রুশ হামলার বিরোধী আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ আরও অনেকেই। সে কারণে মুখোমুখি বিরূপ প্রতিক্রিয়া এড়াতেই বৈঠকে গরহাজির থাকবেন পুতিন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ছাড়াও এখনও আসার বিষয়ে যে দেশগুলি নিশ্চিত করেনি তারা হল, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, মেক্সিকো, জাপান, ইতালি, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল এবং আর্জেন্তিনা।