কলকাতা: আদালতে ধাক্কা খেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় অভিষেককে রক্ষাকবচ দিল না কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। শুক্রবার বিচারপতি অমৃতার সিনহার (Justice Amrita Sinha) এজলাসে অভিষেকের আইনজীবী হাইকোর্টের পুরোন নির্দেশ পুনবিবেচনা করার আবেদন জানান। একই সঙ্গে চাওয়া হয়েছিল রক্ষাকবচ। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, কোনও রক্ষাকবচ নয়। আদালত সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা আছে। যখনই দরকার পড়বে, চলে আসবেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার।
বৃহস্পতিবারই কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন অভিষেক। তার আগে অভিষেককে এই মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই মতো অভিষেক যুক্ত হওয়ারও আবেদন করেন।
এদিন অভিষেকের আইনজীবী কিশোর দত্ত বিচারপতির অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একই সঙ্গে তিনি অভিষেককে রক্ষাকবচ দেওয়ার ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশের সময়সীমা বাড়ানোও আবেদন করেন। এদিন বিচারপতি সিনহা সব আবেদনই খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, অভিষেকের জনসভার ভাষণকে তদন্তের আওতার বাইরে রাখা যাবে না। অভিষেকের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, এটা আপনাকে সমস্যায় ফেলছে কেন? ওই আইনজীবী আদালতের বাইরে বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায়ের বলা কথার ইংরেজি অনুবাদ পেশ করতে চান। তবে বিচারপতি তা গ্রহণ করেননি।
প্রেসিডেন্সি জেল থেকে কুন্তল ঘোষ হেস্টিংস থানার অফিসারকে লিখিত অভিযোগে জানান, সিবিআই এবং ইডির অফিসাররা নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিষেকের নাম বলানোর জন্য তাঁর উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছেন। একই অভিযোগ কুন্তল চিঠিতে জানান আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারককেও। এর মধ্যেই গত ২৯ মার্চ শহীদ মিনার ময়দানে তৃণমূলের এক সভায় অভিষেক অভিযোগ করেন, সারদা মামলায় ধৃত তৃণমূল নেতা মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকেও তাঁর নাম বলানোর জন্য চাপ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তার পরের দিন থেকেই আদালতে যাতায়াতের পথে কুন্তল বেশ কয়েকবার একই অভিযোগ করেন সাংবাদিকদের কাছে। সিবিআই কুন্তলের অভিযোগে সত্যতা জানতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই সূত্রেই বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, অভিষেকের বক্তব্যের সূত্রেই ওই অভিযোগ করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার। এর জন্যই কেন্দ্রীয় এজেন্সি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে উঠে আসে বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায়ের সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রসঙ্গও। শীর্ষ আদালত বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত মামলা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এখন সেই মামলা শুনছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এদিন সেই এজলাসও অভিষেককে কোনও রক্ষাকবচ দিল না।