কলকাতা: সেই কবে বাবুল সুপ্রিয়কে (Babul Supriyo) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) একবার ভিক্টোরিয়া থেকে ঝালমুড়ি খাইয়েছিলেন৷ তার পর থেকে বঙ্গ রাজনীতিতে ওই পর্ব ‘ঝালমুড়ি রাজনীতি’ নামে জনপ্রিয় হয়ে যায়৷ সময় বদলেছে৷ খাতায়-কলমে বাবুল আসানসোলের বিজেপি সাংসদ হলেও এখন তিনি তৃণমূলের (TMC) সদস্য৷ নতুন দলে তিনি যোগ দিতেই আবারও আলোচনায় ফিরে এল ওই ‘ঝালমুড়ি রাজনীতি৷’
প্রাক্তন সহকর্মীকে তোপ দেগে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা (Anupam Hazra) শনিবার জানিয়েছিলেন, ঝালমুড়ি রফা আগেই হয়ে গিয়েছিল৷ সেটা শুনে আজ সাংবাদিক সম্মেলনে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ বলেন, ‘মানুষের নিজেকে বোকা প্রমাণ করার জন্য এত তাড়া কেন থাকে? অনুপম হাজরার প্রশ্নের উত্তর কেন দেব? হাজার হাজার হাজরা আমাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করছে৷ তা আমাকে ভালোবাসে এমন হাজরাদের প্রশ্নের জবাব দেব৷’ পাল্টা ধোকলা রাজনীতির ইঙ্গিত দেন তিনি৷ জানান, বাংলার মানুষের জন্য দরকার পড়লে বিজেপি মন্ত্রীর সঙ্গে ধোকলাও (Dhokla) খাব৷
আরও পড়ুন: টিবরেওয়াল বালাই, ভবানীপুরে ভোটপ্রচার এড়াতে তৃণমূলকে অনুরোধ করবেন বাবুল
এত খাবার ছেড়ে বাবুলের মুখে ধোকলা নাম শুনে ভ্রু কুঁচকেছে রাজনৈতিক মহল৷ ঝালমুড়ি যদি বাঙালির বিকালের মুখরোচক সঙ্গী হয় তাহলে ধোকলাও গুজরাতিদের প্রিয় খাবার৷ আর এখন বিজেপির নম্বর ওয়ান এবং নম্বর টু ব্যক্তি দু’জনেই গুজরাতের (Gujarat) বাসিন্দা৷ একজন নরেন্দ্র মোদি৷ দ্বিতীয়জন অমিত শাহ৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বাবুলের মন্তব্যের মধ্যে যে ব্যাখ্যা করছেন সেটা হল, বাংলার মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে তিনি নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের মুখোমুখি হতে রাজি৷ অতিথিকে অ্যাপায়নে গুজরাতিরা নিশ্চয়ই ঝালমুড়ি খাওয়াবেন না৷ তাঁরা খাওয়াবেন ধোকলা৷ সেই ধোকলা খেতে বাবুল আপত্তি জানাবেন না বলেই স্পষ্ট করে দেন৷
আরও পড়ুন: বুধবারই সাংসদ পদ ছাড়ছেন বাবুল, শিশির-দিব্যেন্দুকে চাপে ফেলতে তৈরি তৃণমূল
তবে সেদিন কেন ঝালমুড়ি খেয়েছিলেন বাবুল আজ বিস্তারিত জানান৷ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন অভিযানের জন্য প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় এসেছিলেন৷ নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল৷ প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য ওই চত্বরে কোনও গাড়ি রাখতে দেওয়া হয়নি৷ প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার পর দিদির গাড়ি এসেছিল৷ ওই সময় আমি এবং জয়ন্ত সিনহা দাঁড়িয়েছিলাম৷ আমাদের রাজভবন যাওয়ার কথা ছিল৷ দিদিও রাজভবনের দিকে যাচ্ছিলেন৷ আমাকে দেখে গাড়িতে উঠতে বলেন৷ আমার মনে হচ্ছিল নতুন মন্ত্রী হয়েছি আসানসোল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তা বলার ছিল৷ তার মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ছিল৷ ইএসআই হাসপাতাল ছিল৷ মোট চারটে ইস্যু ছিল৷ উনি যাওয়ার পথে ভিক্টোরিয়ায় আমাকে ঝালমুড়ি অফার করলেন৷ একজন প্রশাসনিক প্রধান আমাকে বলছেন ঝালমুড়ি খেতে৷ তো আমি কেন না বলতে পারব? কাজের জন্য কারও সঙ্গে আলোচনায় বসে কথা বলাই যেতে পারে৷ বিজেপি মন্ত্রীদের কাছে তৃণমূলের নেতারা তাঁদের মানুষের দাবিদাওয়া জানাতে যান৷ বিজেপি মন্ত্রীর সঙ্গে যদি বসতে হয় ঝালমুড়ি কেন ধোকলা হলেও বসব৷’
আরও পড়ুন: কে পর্যটক বলল, কিছু এসে যায় না; দিলীপকে বর্ণপরিচয় উপহার দিতে চান বাবুল