কলকাতা: কয়েক মুহূর্তের ব্যবধান। আনুষ্ঠানিকভাবে গেরুয়া শিবির ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেওয়া। আর তারপরেই বদলে গেল টুইটারের কভার ছবি। আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। আগে তাঁর অ্যাকাউন্টে ছিল গেরুয়া দলের মহারথীদের নিয়ে পোস্টার। সেখানে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জে পি নাড্ডার সঙ্গে ছিলেন তিনি নিজেও। পোস্টারে বড় বড় করে লেখা, আর নয় অন্যায়। বিজেপির এবারের ভোটের ক্যাম্পেনে এই পোস্টারে ছেয়েছিল সারা বাংলা। এখন সেই কভারে লেখা, তোমায় অসম্মান করে কেউ স্বাছন্দ্য পেতে পারে না (Don’t let someone get comfortable with disrespecting you)। নাম না করে আসানসোলের সাংসদ ঘুরিয়ে বলে দিলেন, বিজেপি তাকে অসম্মান করেছে। মোদির ‘মুঝে বাবুল চাইয়ে’ থেকে টুইটারে মোদির মুখ সরিয়ে দিলেন আসানসোলের সাংসদ – এ এক দীর্ঘ যাত্রাপথ।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দেন বাবুল। সেই সময় এক জনসভায় মোদি, বাবুলকে বলেন, ‘মুঝে বাবুল চাইয়ে’। প্রথম থেকেই বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বাবুলের ঘনিষ্ঠতা ছিল। বিজেপির সৌজন্যে স্থান হয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায়। শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরই। সে সময় মন্ত্রী থেকে বাদ পড়েন তিনি। সেই শুরু। ‘অভিমানী’ বাবুল দীর্ঘ পোস্ট করেন সোশ্যাল সাইটে। প্রথমে জানান, তিনি দলের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখবেন না। তবে সাংসদ থাকবেন আসানসোলের মানুষের উন্নতিতে। এর সঙ্গে ঘোষণা সিপিএম, তৃণমূল , কংগ্রেস কোনও দলেই যাচ্ছেন না তিনি। কিছু পরেই সেই পোস্ট এডিট করে অন্য দলে যাওয়ার বিষয়টি সরিয়ে দেন তিনি। এই পোস্টের পরে বিজেপির নেতারা তাঁর মান ভাঙাতে বৈঠকে বসেন। তাতে কিছুই সুরাহা মেলেনি। যত দিন গেছে, দূরত্ব বেড়েছে। সম্প্রতি ভবানীপুর উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানালেও তাঁর হয়ে প্রচারে যাবেন না বলে জানিয়েছিলেন। অবশেষে তৃণমূলে যোগ দিলেন বাবুল সুপ্রিয়।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের প্রাক-পুজো ধমাকা, মোদির হাত ছেড়ে দিদির হাত ধরলেন বাবুল
শনিবার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ঘাসফুলে এলেন আসানসোলের সাংসদ। এদিন সাংসদ পদ ছাড়ার বিষয়ে বাবুল বলেন, ‘বিজেপির টিকিটে আসানসোলে জিতেছিলাম। তাই ওই পদ থেকে ইস্তফা দেব। সোমবার দিদির সঙ্গে দেখা করব।’ তাঁর তৃণমূলে যোগদান বিজেপি শিবিরের কাছে বড় ধাক্কা।
আরও পড়ুন: বড় সুযোগ পেয়েছি এবার বাংলার জন্য কাজ করব, বললেন বাবুল