নয়াদিল্লি ও পাটনা: পাটলিপুত্র ‘সমঝোতা’র শেষ মুহূর্তে ‘আত্মঘাতী’ হুমকি আম আদমি পার্টির। শুক্রবার পাটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকারি বাসভবন এক আনে মার্গে যখন অ-বিজেপি বিরোধী দলগুলির চাঁদের হাট বসতে চলেছে, তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে ঐক্যের বলয়ে গ্রহণের ছায়া ডেকে আনল আপ। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ‘প্রথম খসড়া’ রচনার আগেই বৈঠক ছেড়ে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ওয়াকআউট করার হুমকি ঐক্যের জল ঘুলিয়ে দিল বৃহস্পতিবার। এদিন অরবিন্দ কেজরিওয়াল হুমকির সুরে জানিয়েছেন, দিল্লি অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে কংগ্রেস যদি আপ সরকারকে সমর্থন না করে, তাহলে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসবেন তিনি।
অন্যদিকে, বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতীও বিরোধীদের বৈঠকের সাফল্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এনডিএ বিরোধীরা প্রয়োজনে হাত মেলাচ্ছে বটে, কিন্তু তাদের হৃদয়ের মিল নেই। উত্তরপ্রদেশ ভোটের সময় এদের কোনও উদ্যোগ ছিল না। মায়াবতীর এই উষ্মাপ্রকাশের কারণ হচ্ছে, এই বৈঠকে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: Patna-Mamata | বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশ বাঁচাতে সকলে ঐক্যবদ্ধ: মমতা
এদিকে, একেবারে শেষ মুহূর্তে রাষ্ট্রীয় লোকদল নেতা জয়ন্ত চৌধুরি চিঠি লিখে নীতীশ কুমারকে জানিয়ে দিলেন, কাল বৈঠকে তিনি থাকতে পারবেন না। পূর্ব নির্ধারিত পারিবারিক অনুষ্ঠানের কারণে তিনি বৈঠকে থাকবেন না। প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির শরিক দল আরএলডি-র সঙ্গে সাম্প্রতিক পুরসভা ভোটে আসন সমঝোতা নিয়ে মনোমালিন্য দেখা দেয়। যদিও দুই তরফেই বলা হয়েছে, সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে। কিন্তু, অনেকের ধারণা সপা নেতা অখিলেশ যাদবের সঙ্গে এক টেবিলে বসতে নারাজ জয়ন্ত চৌধুরি।
আপ সূত্র জানিয়েছে, কংগ্রেসের ‘দ্বিচারিতা’র বিরুদ্ধে লড়াই করার চেয়ে তারা ‘বিজেপি-পন্থী’ এই অভিযোগ মেনে নিতে রাজি আছে। দিল্লি অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে কংগ্রেস আপের সপক্ষে সমর্থন ঘোষণা না করলে বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করবেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল।
উল্লেখ্য, এই পাটনার বুক থেকেই ৪৮ বছর আগে জরুরি অবস্থা জারির প্রতিবাদে ইন্দিরা গান্ধী বিরোধী আন্দোলন ভূমিষ্ঠ হয়েছিল। সেদিন কংগ্রেসের কালা কানুনের প্রতিবাদে জয়প্রকাশ নারায়ণের ডাকে দেশের অ-কংগ্রেসি দলগুলি ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দেয়। ঘটনাচক্রে সেই জরুরি অবস্থা জারির (২৫ জুন) মাত্র দুদিন আগে পাটনাতেই বসতে চলেছে বিরোধীরা। যদিও এবার সেই মহাবৈঠকের স্টিয়ারিং থাকতে পারে ইন্দিরা গান্ধীরই নাতি রাহুল গান্ধীর হাতে।