কলকাতা: বিক্ষিপ্ত কিছু গোলমাল ছাড়া শুক্রবার বাংলার প্রথম দফার ভোট (Lok Sabha Election 2024) শান্তিপূর্ণ ভাবেই কাটল। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত জলপাইগুড়িতে ৭৯ শতাংশ, কোচবিহারে ৭৭ শতাংশ এবং আলিপুরদুয়ারে ভোট পড়েছে ৭৫ শতাংশ। বিকেল পাঁচটায় যাঁরা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের সকলকে ভোট দিতে দেওয়া হবে। এটাই নিয়ম। সেই হিসেবে সন্ধ্যার পরও তিন কেন্দ্রের বহু বুথে ভোটগ্রহণ পর্ব চলে। এদিন সারা দেশে ১০২টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়। একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ভাগ্য চূড়ান্ত হল। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, বাংলাতেই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শতাংশ ভোট পড়েছে।
তীব্র গরমের মধ্যে এদিন ভোট হয়। তাতেও ভোটারদের মধ্যে ভোট দেওয়ার উতসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। বাংলার তিন কেন্দ্রের ভোটের দিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। ভোটের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই কোচবিহার কেন্দ্রে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। এই কেন্দ্র্রের বিজেপি প্রার্থী, বিদায়ী সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহের সঙ্গে বেশ কয়েক দফায় গোলমাল হয়। একাধিকবার কেন্দ্র এবং রাজ্যের এই দুই মন্ত্রী মুখোমুখি হয়ে সংঘর্ষে জড়ান।
আরও পড়ুন: ভোটের মুখে দল ছাড়লেন মেদিনীপুরের বিজেপির প্রথম সারির নেতা
নির্বাচন কমিশনের কাছে কোচবিহারের ভোট ছিল এদিন কড়া চ্যালেঞ্জ। সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েও এই কেন্দ্রে অশান্তি এড়ানো যায়নি। নিশীথের আবেদনে আংশিক সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার কমিশন উদয়নের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেয়। বলা হয়, তিনি নিজের বিধানসভা এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না। ভেটাগুড়িতে এদিন তাঁর গাড়ি স্থানীয় মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে। উদয়নের দাবি, ওই বিক্ষোভ ছিল বিজেপির সাজানো। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় এদিন একটি বুথে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। তাঁকে ঘিরে ধুন্ধুমার ঘটে। পুলিশ বিধায়ককে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। পুলিশের হাত থেকে শিখাকে ছিনতাই করে নিয়ে যান বিজেপি সমর্থকরা। পরে বিজেপি বিধায়ককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ভোটপর্ব শেষে বাংলার শাসকদল দাবি করে, উত্তরবঙ্গের মানুষ দল বেঁধে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, প্রথম দফার ভোটেই বোঝা গিয়েছে, বিজেপির পায়ের তলায় মাটি নেই। তাঁর অভিযোগ, আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা তাঁর নিজের বুথেই এজেন্ট বসাতে পারেননি। এর থেকেই বোঝা যায়, বিজেপির কী করুণ দশা। বিজেপি প্রার্থী অবশ্য এই তথ্য মানতে চাননি।
আরও পড়ুন: ভোটের দিনে বালুরঘাটে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের আটটি আসনের মধ্যে তৃণমূলের হাত ছিল খালি। সাতটি পেয়েছিল বিজেপি। একটি পায় কংগ্রেস। দুই বছর পর বিধানসভা ভোটে সেই ক্ষত কিছুটা মেরামত হয় তৃণমূলের। তাই উত্তরবঙ্গের আসনগুলি এবার তৃণমূলের পাখির চোখ। প্রথম দফার তিন কেন্দ্রের ভোটের প্রচারে সবচেয়ে বেশি সময় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা প্রায় দশদিন ধরে পড়েছিলেন জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে।
ভোট দিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ছোট মহিলা, দেখুন ভিডিও: