ভারত যখন করোনা মহামারীতে জর্জরিত, তখন ব্যতিক্রমী চিত্র দেখা গেল ভারতের এক গ্রামে। মহারাষ্ট্রের থানেতে অবস্থিত গ্রাম কালভণ্ডে। ভারতে করোনা প্রবেশ করেছে ২০২০ সালের মার্চ মাসে। তারপর থেকে মহারাষ্ট্র সহ সারা দেশে মহামারীর আকার ধারণ করে এই ভাইরাস। আশ্চর্য ভাবে করোনা প্রবাহের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রবাহের মধ্যে সব থেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছে মহারাষ্ট্র। থানের কালভণ্ডে গ্রামে ১,৫৬০ জন মানুষের বসবাস। মহারাষ্ট্রের ওপর সবথেকে বেশি করোনা প্রভাব সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত এই গ্রামের একজনকেও ছুঁতে পারেনি করোনা। সমীক্ষা বলছে, গত ৪৪০ দিন ধরে করোনা প্রবেশ করেনি ওই গ্রামে।
করোনা মহামারীর আকার ধারণ করলে দেশ জুড়ে শুরু হয় লকডাউন। থানে সরকার রাজ্যে লকডাউন জারি করলে সকল বিধি নিষেধ মেনেই গ্রামেও শুরু হয় লকডাউন। এমনকি সেই সময় থেকে গ্রামে বহিরাগতদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। নিয়মিত রাস্তা, বাড়ি স্যানিটেজ করা, মাস্ক ব্যবহার, সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া, এই সব কিছুই মেনে চলতেন গ্রামবাসীরা। পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী আগে থাকতে এনে মজুত করে রাখা হয়েছিল। সেই সঙ্গে লকডাউন চলাকালীন জরুরী ভিত্তিতেও মিলত উপযুক্ত ডাক্তারি পরিষেবা। সেক্ষেত্রে গ্রামের আশা কর্মীরাও এক বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান জানান, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় প্রবাহকে রোখা গেছে। এই দেড় বছরে তাঁদের গ্রামের একজনও করোনা আক্রান্তকে হননি। ফলে এই মুহূর্তে তাঁদের লক্ষ্য, দেশে যদি করোনার তৃতীয় প্রবাহ আসে, তাহলে তার থেকে তৃতীয় বারের জন্য নিজেদের গ্রামকে রক্ষা করা। এমনকি কোনো খাবার বা পণ্য সামগ্রী ডেলিভারি দিতে এলে, গ্রামের বাইরে এসে ডেলিভারির গাড়ি দাঁড়াত, সেখান থেকে গিয়েই খাবার নিয়ে আসতে হত। ওই সময় কোনো গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে আশা কর্মীদের সহায়তায় তখন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল বলে জানান পঞ্চায়েত প্রধান। এখন তাঁদের লক্ষ্য, গ্রামের মানুষদের বিশেষ করে ১৮ বছররে ঊর্ধে যাদের বয়স তাঁদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করা। প্রসঙ্গত, করোনার দ্বিতীয় প্রবাহে মহারাষ্ট্রে অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা পেরিয়েছে শতাধিক। যদিও পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ায় এখন আনলক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্রে।