কলকাতা: ভোটের ফল ঘোষণা হতেই হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সমগ্র বাংলা। এমনই অভিযোগ করেছিল বিজেপি। আদালতে দায়ের করা হয় জনস্বার্থ মামলা। রাজ্যে এসে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। যেখানে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল রাজ্য প্রশাসনকে। যা নিয়ে পালটা জবাব দিল রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন- অসমে ৩ দিনের শোক, থমথমে সীমানা, অভিষেকের নিশানায় মোদি সরকার
রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কিছুদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দেয় মানবাধিকার কমিশন৷ তাতে সন্ত্রাসের দায়ভার রাজ্যের শাসক দলের ঘাড়েই চাপায় কমিশন৷ ৩৪২৮ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে রবীন্দ্রনাথের মাটিতে হিংসার শিকার হয়েছেন বহু মানুষ। শ্লীলতাহানি, খুন, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। প্রচুর মানুষকে ভিটেছাড়া হতে হয়েছে৷
আরও পড়ুন- উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জনস্বার্থ মামলা খারিজ হাইকোর্টের
চলতি সপ্তাহের সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা পেশ করে রাজ্য সরকার। যেখানে কড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগের জবাব দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা বিজেপির হয়ে পক্ষপাতিত্ব করেছে। কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বিজেপির প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে রাজ্যের হলফনামায়। এই প্রকারের ব্যক্তিদের থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
রাজ্যের হলফনামায় জানানো হয়েছে যে কমিশনের সদস্য আতিফ রশিদ বিজেপির আইটি সেলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছাত্রজীবনে এবিভিপি করতেন। দিল্লির পুরভোটে বিজেপির হয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন। অপর সদস্য রাজীব জৈন আইবি ডিরেক্টর ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মোদির জমানায় তিনি আমেদাবাদে নিযুক্ত ছিলেন। তারপরে ২০১৮ সালে তাঁর চাকরির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও তা বাড়িয়ে দেয় কেন্দ্রের মোদী সরকার। বিজেপি মহিলা মোর্চার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন কমিশনের অপর সদস্য রাজুলেবন দেশাই। প্রধানমন্ত্রীর ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
এই সকল উদাহরণ দিয়ে রাজ্যের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে বিজেপির প্রভাবেই রাজ্যের বিরুদ্ধে ওই রিপোর্ট পেশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই সঙ্গের আরও বলা হয়েছে যে এই কমিটিকে শুধুমাত্র খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে কমিটি কোনও সুপারিশ করতে পারে না। এখানে কমিটি সিবিআই তদন্তের সুপারিশ দিয়েছে। যেটা এক্তিয়ার বহির্ভূত।
আরও পড়ুন- পর্নোগ্রাফি মামলায় শার্লিনকে সাময়িক স্বস্তি বোম্বে হাইকোর্টের
গত সপ্তাহে শহিদ দিবসের বক্তব্যেও একই সুর শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায়। রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে কার্যত নস্যাৎ করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেছিলেন, ‘বিজেপির মেম্বাররা মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছে৷ পুরোটা ভুল৷ যা হয়েছে প্রি-পোল৷ পোস্ট পোল কোনও হিংসা হয়নি৷ বাকি দেশের জানা উচিত বাংলা কীভাবে সহ্য করেছে৷’