কলকাতা: আজ, বুধবার মহালয়া। মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর কাউন্টাডাউন। আর এক সপ্তাহ পরেও বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। মহালয়া মানে পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের সূচনা। দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল এদিন থেকেই।
পিতৃপক্ষের এক পক্ষকাল পিতৃপুরুষরা মনুষ্যলোকের কাছাকাছি চলে আসে। মহালয়ার দিনে তর্পণ ও শ্রাদ্ধ করে মর্ত্যে আগত পূর্বপুরুষদের বিদায় জানানো হয়। তাঁরা ফিরে যান পিতৃলোকে। তর্পণ শব্দের উৎপত্তি ত্রুপ থেকে। যার অর্থ হল সন্তুষ্ট করা। ঈশ্বর, ঋষি ও পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে জল নিবেদন করার মাধ্যমে তাঁদের সন্তুষ্ট করাকেই তর্পণ বলা হয়।
আরও পড়ুন: পিতৃপুরুষকে জল দিতে মর্ত্যে ফিরেছিলেন কর্ণ
সনাতন ধর্ম অনুসারে, এই বিশেষ দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাদের যে সমাবেশ হয়, তাকে মহালয় বলা হয়। মহালয় থেকে মহালয়া শব্দের সৃষ্টি। মহাভারত অনুসারে, কর্ণ মর্ত্যে এসে যে পক্ষ কাল থেকে পিতৃপুরুষকে অন্নজল দিলেন, তারই নাম হল পিতৃপক্ষ৷ অর্থাৎ, কি না কর্ণই পিতৃপুরুষের প্রতি তর্পণ করা প্রথম উত্তরপুরুষ৷
কিংবদন্তি অনুযায়ী, পিতৃলোকের অবস্থান স্বর্গ এবং মর্ত্যের মাঝে অবস্থান করে। জীবিত ব্যক্তির পূর্ববর্তী তিন পুরুষ পিতৃলোকে অবস্থান করেন। মূলত তৃষ্ণা নিবারণের উদ্দেশে মর্ত্যলোকে আসেন তাঁরা। তাই এই দিনটিতে পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে জল নিবেদন করা হয়। মহাভারতের এবং কৃত্তিবাসী রামায়ণে মহালয়ার উল্লেখ আছে।
আরও পড়ুন: কবে থেকে ঠাকুর দেখা যাবে? জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার
কলকাতায় সহ জেলার বিভিন্ন ঘাটে সকাল থেকেই ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। তর্পণের জন্য বাগবাজার, কুমোরটুলি কিংবা আহিরিটোলা সহ বিভিন্ন ঘাটে ভিড় জমিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। কুমোরটুলি থেকে আজ অনেক প্রতিমাই কলকাতার বিভিন্ন প্যান্ডেলে রওনা দেবে। কলকাতার বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন হওয়ার কথা আজ। এ বার তৃতীয়া থেকেই ঠাকুর দেখা যাবে।