কলকাতা: লিওনেল মেসিকে (Lionel Messi) একঝলক দেখার স্বপ্ন ভেঙে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন হাজার হাজার দর্শক। তার জেরেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে (Yuva Bharti Stadium) ভয়াবহ তাণ্ডব। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল পুলিশ। ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিধাননগর সাউথ থানার তরফে সুয়ো মোটো মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। প্রায় ১০টি ধারায় মামলা হয়েছে, যার মধ্যে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারা রয়েছে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, সরকারি কর্মীকে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার ভিত্তিতেই এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রধান উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে।
আরও পড়ুন: মেসির আগেও এনেছেন পেলে, মারাদোনাকে! কে এই শতদ্রু দত্ত? জেনে নিন
মেসিকে দেখতে হাজার হাজার ভক্ত টিকিট কেটে যুবভারতীতে হাজির হলেও মাঠে কার্যত ঘিরে থাকেন মন্ত্রী ও ভিআইপিরাই। সাধারণ দর্শকরা মাঠে থেকেও ফুটবলের রাজপুত্রকে দেখতে না পাওয়ায় ক্ষোভ চরমে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। ভাঙচুর শুরু হয়, ছোড়া হয় জলের বোতল, ভেঙে ফেলা হয় ক্যানোপি, এমনকি আগুন লাগানো হয় সোফায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়।
দর্শকদের একাংশের প্রশ্ন, পরিস্থিতি এত খারাপ হওয়ার আগেই পুলিশ ও প্রশাসন কোথায় ছিল? হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সাধারণ মানুষ মেসির এক ঝলকও পাননি। অভিযোগ, গোটা অনুষ্ঠানজুড়েই চরম অব্যবস্থা ও প্রস্তুতির অভাব ছিল।
বিশৃঙ্খলার জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও যুবভারতীতে আসতে পারেননি। পরে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ তিনি লেখেন, “এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য আমি লিওনেল মেসি, সকল ক্রীড়াপ্রেমী ও তাঁর ভক্তদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।” পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথাও ঘোষণা করেন তিনি। ওই কমিটিতে মুখ্যসচিবও থাকবেন। ফুটবলের রাজপুত্রের সফরে আনন্দের বদলে বিশৃঙ্খলার সাক্ষী থাকল কলকাতা। দায় কার, কোথায় গলদ—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এখন তদন্তের দিকেই তাকিয়ে সবাই।
দেখুন আরও খবর: