কলকাতা: ‘আপনার গাইনোকোলজিস্ট বলেছেন এখন এখানে ভর্তি হবে না’। অনেকক্ষণ ধরে ফেলে রাখার পর এই বলে সন্তানসম্ভবা তরুণী চিকিৎসককে ফিরিয়ে দিয়েছিল ভাগীরথী নেওটিয়া হাসপাতাল। পরে বেলভিউতে মারা যান তিনি। এই ঘটনায় নেওটিয়া হাসপাতালকে কুড়ি লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন।
বাগুইহাটির বাসিন্দা শ্রদ্ধা ভুতরা গত ২৪ এপ্রিল সন্তানসম্ভবা অবস্থায় বুকে ব্যথা অনুভব করেন। প্রথমে তিনি তার গাইনোকোলজিস্টকে দেখান। অভিযোগ, গাইনোকোলজিস্ট ঠিকমতো গুরুত্ব দেননি। তখন তারা অ্যাপোলো হাসপাতালে যান। কোভিডের কারণ দেখিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতাল ভর্তি নেয়নি। এরপর শ্রদ্ধা ভুতরাকে নিয়ে তাঁর পরিবারের লোকেরা পার্ক স্ট্রিটের ভাগীরথী নেওটিয়া হাসপাতালে যান। সেখানে দীর্ঘক্ষণ ধরে ফেলে রাখার পর নেওটিয়া হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, গাইনোকোলজিস্ট বলেছেন এখানে এডমিশন এই মুহূর্তে হবে না। এরপর বেলভিউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রদ্ধা ভুতরাকে। সেখানেও তাঁকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। এরপর তাঁরা ফেসবুক লাইভ শুরু করেন। ভর্তি নিতে বাধ্য হয় বেলভিউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি জুটার
অনেক দেরিতে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু ঐ দিন রাত ১ টা ১২ মিনিটে বেলভিউতে মারা যান শ্রদ্ধা। তারপর স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হন তাঁর পরিবার। সেই ঘটনার শুনানি আগেই হয়েছিল। সোমবার মামলার রায় দান করেন কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রাক্তন বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি জানিয়েছেন, রোগীর বাড়ির লোকেরা অ্যাপেলোর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ আনেননি। আরেক বেসরকারি হাসপাতাল বেলভিউ সিডি জমা দেয় এবং সেখানে দেখা গেছে যে প্রাথমিক চিকিৎসা হয়েছে। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। চিকিৎসার বিষয় কমিশনের দেখার কথা নয়। কিন্তু নেওটিয়া হাসপাতাল যেভাবে অবহেলা করে ফেলে রেখে ভর্তি না নিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে তার জন্য কুড়ি লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন হাসপাতাল ঘুরে এই মৃত্যুর ঘটনা খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এ বিষয়ে ভাগীরথী নেওটিয়া হাসপাতালের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: পাওয়া যাচ্ছে না মাটি, মিলছে না বায়না, মাথায় হাত প্রতিমা শিল্পীদের