কলকাতা : গড়িয়াহাট কাঁকুলিয়া জোড়া খুনের ঘটনার আগেই পুলিশ আটক করেছিল পরিচারিকা মিঠু হালদারকে। রাতভর জেরা করার পর অবশেষে গ্রেফতার করা হল মিঠু হালদারকে। বুধবার বিকাল ৪ টে নাগাদ লাল বাজার গ্রেফতার করে তাঁকে।
কাঁকুলিয়া রোডে খুনের ঘটনায় তদন্ত ভার নিয়েছিল লাল বাজারের হোমিসাইড শাখা। তারপর থেকেই জোর কদমে চলছিল তদন্ত। এর মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে তদন্তের স্বার্থে ডায়মন্ড হারবারের পৌঁছয় লাল বাজার। কপাট হাট থেকে চাকী পরিবারের পরিচারিকা মিঠু হালদারকে আটক করে হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরা।
রাতভর চলে জিজ্ঞেসাবাদ। এর পর তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। চলে ম্যারাথন জেরা। টানা জেরার পর গ্রেফতার করা হয় সুবীর চাকীর বাড়ির পরিচারিকা মিঠু হালদারকে। গড়িয়াহাট কাকুলিয়া জোড়া খুনের ঘটনায় এই প্রথম কাউকে গ্রেফতার করা হল।
আরও পড়ুন – কাকুলিয়া জোড়া খুনে মূল অভিযুক্তর শেষ মোবাইল লোকেশন ঘটনাস্থল
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়ির মালিক সুবীর চাকী বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপণ দিয়েছিলেন। পরিচারিকা মিঠুর বড় ছেলে ওই বাড়িটি কেনার জন্য সুবীর চাকীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই বাড়িটি দেখতেও আসেন।
এর পরেই ওই পরিচারিকার ছেলে আবারও অন্য ক্রেতার হয়ে ওই বাড়ির মালিক সুবীর চাকীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে, এবার পরিচারিকা এবং তাঁর ছেলে মিলে ষড়যন্ত্র করেন। সেই পরিকল্পনা মতই গোটা ঘটনা ঘটানো হয় বলে অনুমান পুলিশের।
আরও পড়ুন – গড়িয়াহাটে জোড়া খুন, একই বাড়ি থেকে উদ্ধার মালিক ও চালকের মৃতদেহ
লাল বাজারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত রয়েছে। তাঁরা ধরা পড়লে গোটা বিষয়টা স্পষ্ট হবে। ইতিমধ্যেই পরিচারিকার বড় ছেলের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
ঠিক কী হয়েছিল ?
রবিবার রাতে গড়িয়াহাট থানার কাকুলিয়া রোডের একটি বাড়িতে সুবীর চাকী (৬১) ও তাঁর গাড়ির চালক রবিন মণ্ডল (৬৫) এর দেহ উদ্ধার হয়। এর পরেই তদন্তে নামে লাল বাজার।
জানা গিয়েছে, ওই জমিও বাড়ির মালিক ছিলেন সুবীর চাকী। তিনি নিউ টাউনে থাকতেন। তবে, কাকুলিয়া রোডের এই বাড়িটি বিক্রি পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। দাম ধার্য করেছিলেন মোটা টাকা।
ওই বাড়ি বিক্রির কারণে বহু ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগও করেন তিনি। ফলে বিভিন্ন লোকের আনাগোনা ছিল সেখানে। রবিবার সাড়ে ৫টা নাগাদ এক ক্রেতাকে তাঁর সম্পত্তি দেখানোর জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সঙ্গে ছিল গাড়ির চালক রবিন মণ্ডল।
এরপর আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। তাঁকে ফোনেও না পেয়ে অবশেষে স্থানীয় পুলিশকে বিষয়টি জানান তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ তদন্তে নেমে গড়িয়াহাট থানার কাকুলিয়া রোডের ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে সুবীর চাকী ও তাঁর চালকের মৃতদেহ।