কলকাতা: রাজ্যবাসীকে চিকিৎসার জন্য ভিনরাজ্যে যেতে নিষেধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি বলেন, অনেকে চিকিৎসার জন্য ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন। এতে রাজ্যের টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে। জটিল রোগ হলে অবশ্য অন্য কথা। তাঁর দাবি, অনেক ছোটখাট রোগের জন্য বহু মানুষ বাইরে গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এতে বছরে ৩৬ কোটি টাকা বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, ঘরের টাকা ঘরের মধ্যে রোল করলে রাজস্বটা বাংলাতেই থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি, রাজ্যে চিকিৎসা পরিষেবার যথেষ্ট ভালো ব্যবস্থা আছে। খুব একটা জটিল পরিস্থিতি না হলে বাইরে না যাওয়াই ভালো বলে তিনি মনে করেন।
এদিন নবান্নে স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারাও ওই বৈঠকে অংশ নেন। এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কোনও ঢিলেমি দিলে চলবে না। জেলায় জেলায় সরকারি হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকতে হবে। সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁর পরামর্শ, মাস্ক পরুন এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
প্রসঙ্গ স্বাস্থ্যসাথীঃ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়া বাধ্যতামূলক। কেউ যদি নিতে না চায়, তাহলে দেখতে হবে তার কারণ কী। কেউ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না নিলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থাো নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গ কর্মী সংকটঃ রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কর্মীর খুব অভাব রয়েছে। এই মুহূর্তে নার্স, প্যাথোলোজির কর্মী এবং চিকিৎসক প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরে সাড়ে ১১ হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মী নেওয়া হবে বলে মন্ত্রীসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, স্বাস্থ্য দফতরে যেখানে যেখানে কর্মী নিয়োগ বাকি রয়েছে, সেখানে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগও দ্রুত সেরে ফেলতে হবে।
প্রসঙ্গ করোনাঃ রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী এদিনের বৈঠকে বলেন, আত্মসন্তুষ্টিতে ভোগা চলবে না। প্রত্যেককে মাস্ক এবং স্যানেটাইজার ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। তবে সচেতন থাকতে হবে। চতুর্থ ঢেউ এলেও তা যাতে ছড়াতে না পারে তার জন্য সমস্ত আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখারও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: BJP Worker’s Death: টানা ৪ ঘন্টা পুলিসি জিজ্ঞাসাবাদ অর্জুনের দাদাকে
প্রসঙ্গ ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়াঃ ফি বছরই বর্ষার সময় ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দেয় রাজ্যে। তাই এই দুই রোগের মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা দেয় প্রতি বছর। তাই ওই জেলার উপর স্বাস্থ্য কর্তাদের বিশেষ নজর রাখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গ রক্ত সংকটঃ ফি বছর গরমের সময় রক্তের সংকট তৈরি হয়। সেই কারণে রক্তদান শিবির বাড়ানোর উপর জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা এবং রাজ্য পুলিসকে নিয়মিত এই ধরমের শিবিরের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন ক্লাবকেও মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে হবে।