কলকাতা: দুই সন্তান। স্ত্রী। ফুলেফেঁপে ওঠা ব্যাবসা। দুঃখ, অভিমান-রাগ-হতাশা কোনটাই হয়ত ছিল না। শুক্রবার সকাল অবধি এটা বলাই যাচ্ছিল।
সব গুঞ্জন বেড়ে গেল বছর পঞ্চাশের মুখেশ খেমকারের আত্মহত্যার পরে। হতাশা-দুঃখ-অভিমান সবই হয়ত ছিল। চাপা ছিল। হয়ত ছিল মানসিক অবসাদও। লাউডন স্ট্রিটের বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্তহত্যা করার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে এই অবসাদকেই তুলে আনছে পুলিস।
কীসের অবসাদ?
প্রশ্নটা ঘুরে ফিরে আসছিল। তখনই পুলিস জানাল, নিজের স্থূলকায় শরীর নিয়ে খুব সম্ভবত অবসাদে ভুগছিলেন কোটিপতি এই ব্যবসায়ী। প্রাথমিকভাবে পুলিসের অনুমান, শরীরের আকার নিয়ে খোঁটাও শুনতে হত এই ব্যবসায়ীকে। আর তা থেকেই সম্ভবত ১১ তলা থেকে ঝাঁপ।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন রোজ নিয়ম করে হাঁটা চলা, ব্যয়াম করতে দেখা যেত ওই ব্যবসায়ীকে। জিমে যেতেন। কসরত করতেন। ঘাম ঝরাতেন। খেমকারের পরিবার জানাচ্ছে, শরীর নিয়ে সবসময়ই একটা খুঁতখুঁতানি ছিল মুকেশের।
আরও পড়ুন- Food timings & Weight loss: শুধু পুষ্টিকর খাবার খেলেই হবে না, ওজন কমাতে খেতে হবে সঠিক সময় মেনে
ঝাঁ চকচকে আধুনিক সমাজের সঙ্গে ওঠাপড়া লেগেই ছিল। ব্যবসায়ীক কাজেও অনেকের সঙ্গে অনেক জায়গায় যেতে হত। নতুন নতুন লোকের সঙ্গে আলাপ পরিচয় হতেই থাকত। তাই নিজেকে অন্যের চোখে সুন্দর দেখানোর একটা তাদিগ সবসময়ই মুকেশ অনুভব করতেন। এমনটাই জানা গিয়েছে। পুলিসও প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে অবসাদকেই সামনে এনেছে। তারাও মনে করছে অনেক চেষ্টা করেছিলেন নিজেকে ফিট-স্মার্ট রাখার। কিন্তু কোথায় যেন একটা খামতি থেকেই যাচ্ছিল। সুন্দর দেখানোর- রোগা(স্লিম)রাখার এই লড়াইয়ে হেরেই কি মুকেশ আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন?
এই প্রসঙ্গে মনস্তত্ববিদ রিমা মুখোপাধ্যায় বলছেন, আমাদের সমাজে একজন স্থূলকায় মানুষকে অনেক গুঞ্জন শুনতে হয়। আমরা অনেক ক্ষেত্রেই কোনও খবর রাখি না। এক্ষেত্রেও হয়ত এমন কিছু ঘটে থাকতে পারে। যা ওই ব্যবসায়ীকে হয়ত প্রবল মানসিক দ্বন্দ্বের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। যেখান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া, বলা ভাল আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া অনেক সহজ বলে মনে করেছিলেন।
আরও পড়ুন- Weather Forecast: গরমে নাজেহাল রাজ্যবাসী, আরও বাড়বে তাপমাত্রা জানাল হাওয়া অফিস
এর সঙ্গে অবশ্য আরও কিছু সম্ভাবনাকে সামনে রাখছেন তদন্তকারীরা। এর মধ্যে রয়েছে, ব্যবসায়িক কোনও সমস্যা ছিল কি না, ঋণের বোঝা ছিল কি না, পারিবারিক কোনও সমস্যা ছিল কি না সেগুলকেও তদন্তের জন্য নজরে রাখছে পুলিস।