কলকাতা: ফেসবুক (Facebook) পোস্ট করে বারবারই নিজের জগতে ফেরার আকুতি শোনা গিয়েছিল৷ এমনকী সুপ্রিয় বড়াল কীভাবে বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) হয়ে উঠল সেকথাও ঘনিষ্ঠ জনের কাছে মাঝে মাঝেই বলে ফেলতেন৷ ২০১৪ সালের মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’র সেই গায়ক যেন হারিয়ে যেতে শুরু করেছিলেন৷ আজ সাংবাদিক সম্মেলনে বাবুলের বক্তব্য, ‘দিদি বলেছে মন দিয়ে দল করতে৷ আর গান গাইতে৷’ বাবুলের এহেন বক্তব্যের পরই গুঞ্জন শুরু হয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে৷ কান পাতলে শোনা যাচ্ছে কেউ কেউ বলে ফেলছেন, তাহলে কি সাত বছর গান গাইতে পারছিলেন না? নাকি দলে থেকে গান গাইতে পারছিলেন না?
আরও পড়ুন: Babul Supriyo: তৃণমূল-একাদশে কোন পজিশনে খেলবেন বাবুল? বলবেন মমতা
বাবুল সুপ্রিয় মানেই যেন একটা আবেগের পরিচয়৷ দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে বাড়ি ছেড়ে ট্রেনে উঠে পড়া, মুম্বইয়ে পাড়ি দেওয়া৷ গায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে শহরতলির এক যুবকের মুম্বই পাড়ি দেওয়া আর একের পর এক হিট গান উপহার দেওয়া রুপোলি পর্দার স্বপ্নের মত৷ সেই বাবুল সুপ্রিয়ই একদিন বিমানে যোগগুরু বাবা রামদেবকে পাশে বসিয়ে উড়ন্ত চুম্বন ছুড়ে রাজনীতিকে ভালোবাসা এবং রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন৷ চুম্বন ছুড়ে বার্তা দিয়েছিলেন বটে৷ কিন্তু কোথায় যেন বাবুলের গায়ক স্বত্ত্বা হারিয়ে যাচ্ছিল৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাঁকে দেখা গিয়েছে নেতা বা মন্ত্রী হিসেবে৷ কিন্তু গায়ক হিসেবে ঠিক তেমনভাবে পাওয়া যাচ্ছিল না৷ সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল৷ অল্প কিছু গানের অনুষ্ঠানে গলা মেলাল কেমন যেন একটা ছন্নছাড়া লাগছিল৷ চোখে-মুখে মন্ত্রিত্বের চাপ ফুটে উঠছিল৷ কোথায় যেন একটা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা চোখে পড়ছিল৷ শুধু ঘনিষ্ঠ জন নয়, সোশাল মিডিয়াতে নিজের পরিচিত পেশায় ফিরে যাওয়ার কথাও বলতে শোনা গিয়েছে বাবুলকে৷
তার পরেই যেন জল্পনা তৈরি হচ্ছিল৷ গেরুয়া শিবিরের রাজনৈতিক চাপে ব্যক্তি বাবুল হারিয়ে যাচ্ছেন৷ সঙ্গে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের চাপও বাড়ছিল৷ রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বা দিনকয়েক আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দুর অধিকারীর সঙ্গে বাবুলের অম্ল-মধুর সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসছিল৷ দিলীপঘোষের মত নেতাদের বারবারই বাবুলের শিল্পী সত্ত্বা নিয়েও কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছে৷ সংশ্লিষ্ট মহলের অনুমান এভাবে শিল্পী বাবুলকে আক্রমণ কোথাও যেন একটা ব্যবধান তৈরি করছিল৷ আজ সাংবাদিক সম্মেলনে সেই ক্ষোভের কথাই যেন ফুটে উঠল বাবুল সুপ্রিয় মুখ থেকে৷ যখন বললেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, মন দিয়ে গান করার কথা৷
আরও পড়ুন: চব্বিশের লোকসভা ভোটে মোদি বিরোধিতার অন্যতম মুখ মমতা: বাবুল
যে গানই সুপ্রিয় বড়ালের পরিচিত পাল্টে দিয়েছি সেই সুপ্রিয় কি আজ গান থেকে বহু দূরে? রাজনৈতিক চাপ কি শিল্পী বাবুলের উপর প্রভাব বিস্তার করছিল? শিল্পী বাবুলের স্বত্ত্বাকে চাপা দিয়ে দিচ্ছিল? এসব প্রশ্নের আজ তীব্র হতে শুরু করেছে৷ তাহলে কী এতদিন বিজেপিতে ‘দমবন্ধ’ হয়ে যাচ্ছিল শিল্পী বাবুলের? আগামিদিনে এই প্রশ্নের উত্তর দেবে৷