কলকাতা: বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলের হাত ধরার বার্তা আগেই দিয়েছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান তথা সিপিএম নেতা বিমান বসু। এ বার সেই একই সুর শোনা গেল বামফ্রন্টের অপর শরিক সিপিআই(CPI)-এর গলায়। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বঙ্গে বামেদের ভরাডুবি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানিয়েছেন সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- আমি লিডার নই ক্যাডার, সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্তব্য মমতার
বিধানসভা নির্বাচনে একটি আসন পায়নি বামেরা। জোট শরিক কংগ্রেসের অবস্থাও একই রকম। শরিক হিসেবে আইএসএফ প্রার্থী নওসাদ সিদ্দিকি জিতেছেন ভাঙড় কেন্দ্র থেকে। সংযুক্ত মোর্চার ওই একজনই গিয়েছেন বিধানসভায়। এই প্রবল প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়াতে এবং বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলকে পাশে চাইছে সিপিআই।
আরও পড়ুন- যোগী-মোদির রাজ্যে তৃণমূলের বার্তা নিয়ে যাবেন মমতা
সাংবাদিক বৈঠকে আত্মসমালোচনাও শোনা গিয়েছে সিপিআই নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। তিনি বলেছেন, “রাজ্যে বামপন্থীদের ভোট একদিনে তলানিতে ঠেকার ঘটনা নয়। ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই এর শুরু। মানুষ কেন প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছেন? আত্মানুসন্ধানের প্রয়োজন। বামপন্থী আন্দোলনের আরও নিবিড় পর্যালোচনার প্রয়োজন। জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে দল এবং মানুষের মেজাজ বুঝতে পারিনি।”
আরও পড়ুন- বালি পাচারে নিয়ে বিজেপি-জেলা পরিষদ তরজা পুরুলিয়ায়
মানুষের প্রত্যাখ্যান করে দেওয়া নীতি বলপূর্বক চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ভুল ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন সিপিআই সম্পাদক। দীর্ঘদিন শাসনের দম্ভ এই পরিস্থিতির বড় কারণ বলেও জানিয়েছেন তিনি। স্বপনবাবুর কথায়, “জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে দল এবং মানুষের মেজাজ বুঝতে পারিনি। চেতনা জাগ্রত হয়নি, সংখ্যাতে বুঁদ হয়ে ছিলাম।”
আরও পড়ুন- পেগাসাস ইস্যুতে অভিষেকের নেতৃত্বে সংসদে প্রতিবাদ তৃণমূল সাংসদদের
এরপরেই তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে গত বিধানসভা নির্বাচনে করা ভুল কীর্তির কথা। তিনি জানিয়েছেন যে মমতার বিরুদ্ধে লড়াই এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পার্থক্য সাধারণ মানুষকে বোঝাতে পারেনি বামেরা। তৃণমূলের হিংসার বিরুদ্ধে প্রচার করা হয়েছে, চটুল গান তৈরিসহ অনেক প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। যা মানুষ গ্রহণ করেনি বলেই মনে করছেন স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, “আমরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার করেছি। চটুল গান ইত্যাদি তৈরি করেছি। বিজেমূল তত্ত্ব তৈরি করা হয়েছিল যা মানুষ ভালোভাবে নেয়নি।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের পরে মনে করা হচ্ছিল তৃণমূল শেষ। কিন্তু তা হয়নি, লড়াই করে বিজেপিকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন মমতা।”
আরও পড়ুন- আইইডি হামলার পর এবার করাচিতে গুলিবিদ্ধ ২ চীনা নাগরিক
এই অবস্থায় বিজেপিকে রুখতে কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার হাত ধরতে প্রস্তুত সিপিআই। কেরলে যেমন কংগ্রেস বামেদের শত্রু হলেও দিল্লিতে বিজেপি বিরোধিতায় বন্ধুত্ব রয়েছে। সেই তত্ত্ব মেনেই আগামীতে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে বাঙালিদের জাগ্রত করার জন্য মমতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সিপিআই সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়।