কলকাতা: ১ জুলাই থেকে গণপরিবহণ ব্যবস্থায় বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চালনোয় ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার। লকডাউনের আগে কলকাতার রাস্তায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বেসরকারি বাস ও মিনিবাস চলত। গোটা রাজ্যে সেই সংখ্যাটা ছিল প্রায় ২৭ হাজার। কিন্তু জ্বালানির লাগাতার মূল্যবৃদ্ধির জেরে রাস্তায় আদৌ বেসরকারি বাস চলবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে বাস মালিক সংগঠনগুলি। বাস মালিকদের মতে, জ্বালানির দাম এতটাই বেড়েছে যে আগের ভাড়ায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চালানো মুশকিল।
আরও পড়ুন: ট্রেন-মেট্রো এখনই না, ১লা জুলাই থেকে চলবে বাস
নির্বাচন পরবর্তী সময়ে করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বেড়ে চলায় গণপরিবহণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সংক্রমণে লাগাম টানতে ১৬ মে থেকে পুরোপুরি বন্ধ ছিল বাস মিনিবাস পরিষেবা। করোনা পরিস্থিতিতেও ধারাবাহিক ভাবে বেড়েছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। তাই ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে এই আর্থিক সঙ্কট কাটানো কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন বাস মালিক সংগঠনগুলি। পুরোনো ভাড়ায় পরিষেবা দিতে সমস্যায় পড়তে হবে বলে জানাচ্ছেন ওয়েস্টবেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু।
মাসখানেক বিধিনিষেধ চলায় করোনা সংক্রমণের হার আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। বিধিনিষেধ শিথিল করে জনজীবন স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে হাঁটতে চাইছে প্রশাসন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে ভাড়ার পুনর্বিন্যাস জরুরি বলে মনে করছেন অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: অমিতকে পেট পুরে খাইয়ে অর্ধাহারে বাসুদেব বাউল
ভোটের পর থেকে লাফিয়ে বেড়েছে জ্বালানির দাম। ডিজেলের লিটার প্রতি দাম এখন ৯২ টাকা। গত এক বছরে লিটার পিছু ডিজেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ টাকা। ডিজেলের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফেলেছে গাড়ির যন্ত্রাংশের দাম। কিন্ত ভাড়া সে ভাবে বাড়েনি। পরিবহণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের একাংশ রোজগারের আশায় অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নিলে তাঁরাও কাজে নামবেন কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। পরিবহণ কর্মীদের মাত্র ৪০ শতাংশ এখনও পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন।
আপাতত ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি অফিস খোলা রয়েছে। জুলাই থেকে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস চলবে। লোকাল ট্রেন ও মেট্রো সাধারণের জন্য খুলে না দেওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি বাসের উপর যাত্রীচাপ বাড়বে। কিন্তু ভাড়ার পুনর্বিন্যাস না হলে কতগুলি বাস রাস্তায় নামবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ১ জুলাই থেকে সরকারি ও বেসরকারি বাস মিনিবাস পরিষেবা দেওয়াটা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের বলে মনে করছে প্রশাসনের একাংশও।