শান্তিনিকেতন: যাঁর বাড়িতে পেট পুরে খেয়েছিলেন অমিত শাহ, তিনিই এখন অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন৷
তিনি বাসুদেব দাস বাউল৷ আধপেটা থাকার অভ্যেস আছে৷ কিন্তু সেই যে দিল্লি থেকে অমিত শাহ এসে তাঁর দাওয়ায় বসে পাত পেড়ে খেলেন, তার পর থেকেই অভ্যেসটা একটু বদলাবে ভেবেছিলেন৷ কিন্তু সে-সব কিছুই হয়নি৷ নেতারা হেরে আর এ-মুখো হন না৷ গরিবের বাড়িতে অন্নগ্রহণ করার যাত্রাপালাও শেষ হয়েছে৷ বাসুদেব অতএব ফিরে গিয়েছেন পুরনো অভ্যেসে৷ নিয়মিত আধপেটা খাওয়া এবং কবে ভবসাগরে সুখের চিলতে ঢেউ উঠবে তার দিকে তাকিয়ে থাকা৷
বিধানসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবিরের সর্বভারতীয় নেতারা নিয়ম করে বাংলায় আসতেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডারা কার্যত ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন। বঙ্গবাসীর মন জয়ে মন্দিরে মন্দিরে ঘোরা থেকে শুরু করে আদিবাসী-মতুয়া বাড়িতে পাত পেড়ে খাওয়া- কোনও কিছুই বাকি রাখেননি গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতারা।
আরও পড়ুন: ‘মোদি ভিক্ষার ঝুলি ধরবেন’, তৃণমূলে যোগ দিয়ে মন্তব্য বিজেপি কর্মীদের
বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলেন বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনের বাসুদেব দাস বাউল। তাঁর বাড়িতে পাত পেড়ে দুপুরের খাবার খেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু সেই বাসুদেববাবুই আজ কার্যত অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। রাজ্য সরকারের রেশনের চাল, গম, আটা এবং মুখ্যমন্ত্রীর বাউল ভাতাটুকুই বাসুদেববাবুর সম্বল। বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে বাউল পরিবার।
অমিত শাহ তাঁর বাড়িতে খেয়ে যাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই বোলপুরে পদযাত্রা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই মিছিলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল এই বাউল শিল্পীকে। বাউলের একতারা এখন স্তব্ধ। গান-বাজনা অনুষ্ঠান সব কিছুই এখন বন্ধ। খুব স্বাভাবিকভাবেই পেটে টান পড়েছে বাসুদেববাবুর। করোনার পরিস্থিতিতে তিনি কী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন, সেই খোঁজ নিল কলকাতা টিভি ডিজিটাল।
আরও পড়ুন: মাথা মুড়িয়ে প্রায়শ্চিত্ত, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলেন শতাধিক কর্মী
বাসুদেব দাস বাউল জানান, রাজ্য এবং কেন্দ্রের বিজেপি নেতারা একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচনী প্রচারে এসে তাঁদের বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করেছিলেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে বিধি-নিষেধ চলাকালীন বিজেপির কোনও নেতা-কর্মীরা খবর নেয়নি, কেমন আছেন বাসুদেব দাস বাউল। তাঁর কথায়, রাজ্য সরকারের বাউল ভাতা, রেশনের চাল, গম, আটাই ভরসা আমাদের। একরাশ ক্ষোভ ধরা পড়েছে বাসুদেব দাস বাউলের স্ত্রী উর্মিলা দেবীর গলাতেও। তিনিও একই অভিযোগ করেছেন।