কলকাতা : কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই ১১০ জন কর্মীকে তাদের প্রাপ্য না দিয়েই চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে অশোক হল গ্রুপ। তারই প্রতিবাদে বালিগঞ্জের মহাদেবি বিড়লা শিশু বিহার স্কুলে বাইরে প্ল্যাকার্ড পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখালেন শিক্ষক এবং বিদ্যালয়ের কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার স্কুল খোলার ঠিক আগেই সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
লকডাউনের মধ্যে কর্মী ছাঁটাই করা যাবে না, এমনই নির্দেশ ছিল সুপ্রিম কোর্টের। করোনার অজুহাতে বেশিরভাগ বেসরকারি অফিস ও স্কুল থেকে নির্বিচারে কর্মী ছাঁটাই চলছিল। পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে খানিকটা হলেও শিথিল হয়েছিল এই পরিস্থিতি। তবে এর বিপরীত চিত্র দেখা গেল কলকাতায়। গত বছরে লকডাউন শুরু থেকে একটু একটু করে কর্মী সংকোচনের পথে নেমেছিল অশোক হল গ্রুপ। গ্রুপের অধীনে পাঁচটি স্কুল রয়েছে। প্রায় সবকটি স্কুল থেকেই প্রিন্সিপাল, শিক্ষক ও গ্রুপ ডি স্টাফ থেকে শুরু করে প্রায় ১০০ জনেরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। এদের মধ্যে কেউ ২০ বছর, কেউ ৩০ বছর এই গ্রুপের অধীনে স্কুলগুলিতে কাজ করেছেন। এই কাজে নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, এদের টার্মিনেট করতে হলে এক মাসের অতিরিক্ত বেতন দেওয়া হবে। অথচ টার্মিনেশনের পর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও তারা কোনও টাকা পাননি। এমনকি কর্মীদের মধ্যে অনেকেই গ্র্যাচুইটির টাকাও পাননি বলে অভিযোগ। শম্ভুনাথ সাহা স্কুল বাস চালাতেন। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তিনি তাঁর দায়িত্ব সামলেছেন। নিরাপদে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিজের দায়িত্বে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছেন। অথচ তার কর্মজীবনের আর মাত্র আড়াই মাস বাকি থাকতে তাঁকেও চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দেওয়া হয়। তার একটাই বক্তব্য সারা জীবন সততার সঙ্গে কাজ করে শেষ কর্মজীবনে প্রাপ্য সম্মানটুকু তিনি পেলেন না। এখন স্কুল খুলেছে। তাঁদের একটাই দাবি, নতুন ভাবে কাউকে নেওয়ার আগে তাদের কথাটা বিবেচনা করুক স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের দ্বারস্থ হলে কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের কিছু করার নেই। নতুন ভাবে তাঁদের চাকরিতে আর বহাল করা যাবে না।