কলকাতা: গতিতে এগিয়ে আসছে উল্কাপিণ্ড।মনে হচ্ছে এই বুঝি আপনার গায়ে লাগল। ভয়ে চোখ বুজে ফেলেছেন আপনি। অথচ কিছুই হল না। এমন কত থ্রিডি সিনেমা আমরা দেখে থাকি হলে। কিংবা ইতিহাসের বইয়ের পাতায় মহেঞ্জোদারো কিংবা হরপ্পার সেই দেওয়াল দেখার ইচ্ছে ছোটবেলা থেকে অনেকেরই। কিন্তু উপায় তো নেই। তাই বাড়িতে বসে মোবাইল নয়তো কম্পিউটার আর না হলে টিভিতে বসে দেখতে হয়েছে এতদিন। যা চোখে দেখা এখনও পর্যন্ত বাঙালির সম্ভব হয়নি। কিন্তু পদার্থবিদ্যার স্টিরিওস্কোপির (Stereoscopy) দৌলতে এবার সেটাও সম্ভব হতে চলেছে। অন্তত কলকাতার গবেষক চট্টোপাধ্যায়ের এতদিনের গবেষণায় এমন অসম্ভব টাই সম্ভব হয়েছে। এর আগেও স্টিরিওস্কোপির ব্যাবহার হয়েছে বটে। তবে সবটাই বিদেশি প্রযুক্তি আমদানি করে। অবশ্যই সেটা সিনেমার ক্ষেত্রে, বিনোদনের ক্ষেত্রে। কিন্তু এবার পর্দায় ফেলা যে কোনও ছবিতে তৃতীয় মাত্রা যোগ করা যাবে। যে কোন ছবি বা সিনেমাকে বিদেশে কোনও টেকনোলজি ছাড়াই বানানো যাবে থ্রিডিতে।
ভবানীপুরের বাসিন্দা পেশায় সফটওয়্যার প্রোগ্রামার সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়ের এই আবিষ্কার দিশা খুলে দিয়েছে দুনিয়ার কাছে।স্বল্প মাত্রার খরচে আপনি যে কোন ছবি কিংবা যে কোন সিনেমাকে থ্রিডিতে বদলে ফেলতে পারবেন। সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় এই তত্ত্বের ভিত্তিতে সম্ভব হয়েছে তা। ১৪ বছর গবেষণা চালানোর পর পেটেন্টটি পেয়েছেন সন্দীপবাবু।
এবার আসা যাক আপনার তাতে কী উপকার হতে পারে?
সাধারণ মানুষ বিষয়টাকে কঠিন করে দেখলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এটি পদার্থবিদ্যার ক্ষেত্রে। ব্যবহার জানলে অবাক হবেন। শুধুমাত্র কী সিনেমা নাকি অন্য নানা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে কলকাতার এই গবেষক সন্ধীপ চট্টোপাধ্যায় এর তত্ত্ব? গবেষক নিজেই জানিয়েছেন, তার এই তত্ত্ব পদার্থবিদ্যা শুধুমাত্র বিনোদন জগতেই নয় তার এই গবেষণা যেমন বৈজ্ঞানিক মহলে প্রভাব ফেলবে একই সঙ্গে কাজে লাগবে প্রত্নতত্ত্ববিদ্যা, মহাকাশচর্চা, ভূ-বিদ্যা সবক্ষেত্রেই। এককথায় সমুদ্র থেকে মহাশূন্য সব ধরনের গবেষণার কাজে ব্যবহার করা যাবে এই থিয়োরি।
এই থিওরী কেন আলাদা?
এতদিন ধরেস্টিরিওস্কোপি নিয়ে যে ধরনের আলোচনা হয়ে এসেছে বা যেভাবে স্টিরিওস্কোপির কাজ হয়ে এসেছে তা খানিকটা ব্যয়বহুল ছিল। তবে তার কথাতে, ছবিতে দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ দুটো মাথাকে বাস্তবে এর সঙ্গে যোগ করা হয়। বাস্তবে তার সঙ্গে উচ্চতার মাত্রাটি যোগ হয়। তার প্রোগ্রামিংয়ে এই উচ্চতার তৃতীয় মাত্রাটি অনেক উন্নত ভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হয়েছে। সেজন্য যেকোনও ধরনের ছবির দ্বিমাত্রিক চেহারা থেকে ত্রিমাত্রিক চেহারায় নিয়ে আসা যাবে সহজেই।
উদাহরণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, সিনেমা হলে যে ধরনের থ্রিডি চশমা ব্যবহার করা হয়। তা খানিকটা ব্যয়বহুল। সেইরকমই চশমা ব্যবহার করে স্বল্প টাকায় তার তত্ত্ব ব্যবহার করে সিনেমাহলের থ্রিডি’ ছবির মজা নিতে পারবেন দর্শকরা এমনকি বাচ্চার খেলনার ছবি কিংবা কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথি সবকিছুকেই স্বল্প খরচে পাল্টে দেওয়া যাবে। যে কাজটি এতদিন বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচুর টাকা খরচ করে ব্যবহার করা হত। থ্রিডি ছবি কিংবা সিনেমা করার জন্য এবার কলকাতার গবেষক সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়ের আবিষ্কৃত তত্ত্ব বদলে দিতে পারে ধারণা । যিনি প্রথম ভারতে স্টিরিওস্কোপির এই বিশেষ দিক নিয়ে পেটেন্ট পেয়েছেন।
আরও পড়ুন Ladakh Accident: সেনাবাহিনীর বাস নদীতে, হত ৭ জওয়ান, জখম ১৯