কাবুল: তালিবানের (Taliban) ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হলেন ২৪ বছরের বেহাস্তা আর্গহান্দ (Beheshta Arghand)৷ টোলো নিউজের ওই নির্ভীক মহিলা সঞ্চালক-সাংবাদিক তালিবান মুখপাত্রের চোখে চোখ রেখে ইন্টারভিউ (Interview) নিয়েছিলেন৷ আফগানরা তো বটেই, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ওই সাক্ষাতকার বাইরেও সাড়া ফেলে দিয়েছিল৷ তালিবানের এমন ভোলবদল দেখে চমকে উঠেছিল গোটা বিশ্ব৷ পরে বুঝতে পারে, ওটা ছিল তালিবানের ‘আইওয়াশ’৷ তবে সব মহল থেকে বাহবা কুড়িয়েছিলেন বেহাস্তা৷ কেউ কেউ তাঁকে সাহসিনী বলেও প্রশংসা করেন৷ সেই সাহসিনীকেও প্রাণ বাঁচাতে তালিবানের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হল৷
আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর তালিবান জানিয়েছিল, তারা শরিয়া আইন মেনে দেশ শাসন করবে৷ মহিলাদের কাজ করার অনুমতি দেবে৷ কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টোটা৷ কুকুরের মত গন্ধ শুঁকে মহিলা সাংবাদিকদের খোঁজা শুরু করে জঙ্গিরা৷ শুধু তাই নয়, মহিলা সঞ্চালকদের কাজে বাধা দেওয়া হয়৷ তালিব যোদ্ধারা তাঁদের অফিসে ঢুকতে পর্যন্ত দেয়নি৷ অফিসের গেটের মুখ থেকে বাড়ি চলে যেতে বলা হয়৷ এমন পরিস্থিতিতে তালিবানের মিডিয়া টিমের সদস্য আব্দুল্লাহাক হেমাদে-এর সাক্ষাতকার নেন বেহাস্তা৷ সেই সাক্ষাতকার সাড়া ফেলে দেয় গোটা বিশ্বে৷
NIMA WORAZ: #Kabul Situation Discussed [Pashto]
In this program, host Beheshta Arghand interviews Mawlawi Abdulhaq Hemad, a close member of the Taliban’s media team, about Kabul’s situation and house-to-house searches in the city. https://t.co/P11zbvxGQC pic.twitter.com/Pk95F54xGr
— TOLOnews (@TOLOnews) August 17, 2021
আরও পড়ুন: ফের কাবুল বিমানবন্দরে হামলা, গাড়ি থেকে পরপর ছোড়া হল রকেট
দেশ থেকে পালানো সেই আফগান তরুণী সঞ্চালকের সঙ্গে কথা বলে মার্কিন মিডিয়া সিএনএনের প্রতিনিধি৷ সেখানে বেহাস্তা জানান, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে তিনি সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন৷ তাঁর স্বপ্নপূরণও হয়৷ আফগানিস্তানের প্রথম স্বাধীন মিডিয়া টোলো নিউজে সঞ্চালকের চাকরি পেয়ে যান৷ কিন্তু ১৫ অগস্টের পর সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন একটু একটু করে ভাঙতে দেখেন৷ তালিবান যেভাবে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ করতে শুরু করে তখনই বেহাস্তা বুঝে যান, এদেশে থাকা আর নিরাপদ নয়৷
আরও পড়ুন: দোকানের নাম শ্রীনাথ ধোসা সেন্টার রাখায় মথুরায় মুসলিম বিক্রেতাকে হুমকি
যদিও ১৭ অগস্ট তিনি তালিবান মুখপাত্রের সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন৷ সিএনএন-কে বেহাস্তা বলেন, ‘খুব কঠিন ছিল সেই সাক্ষাতকার৷ কিন্তু আফগান মহিলাদের কথা ভেবে ওই সাক্ষাতকার আমি নিয়েছিলাম৷’ তার পরেই আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যান তিনি৷ তরুণী সঞ্চালকের কথায়, ‘আমি দেশ ছেড়ে চলে এসেছি৷ কারণ, লক্ষ লক্ষ মানুষের মত আমিও তালিবানকে ভয় পাই৷’ তবে তিনি জানান, তিনটি শর্তে আফগানিস্তানে ফিরতে রাজি৷ প্রথমত, তালিবানকে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে৷ দ্বিতীয়ত, আফগানিস্তানে পরিস্থিতির উন্নতি হলে এবং তৃতীয়ত, তাঁর প্রাণহানির আশঙ্কা দূর হলে৷ আফগানিস্তানে থাকা নিরাপদ মনে হলে তবেই তিনি মাতৃভূমিতে ফিরবেন৷ নচেৎ নয়৷