মাজার আল-কবির: দক্ষিণ-পূর্ব ইরাক (Iraq) হাজার হাজার মরা মাছ ভেসে পাড়ে এল। মায়সানের মাজার আল-কবিরের (Mazar Al-Kabir) আমশান নদীর (Amshan River) মাছ সেগুলো। এই মায়সান ইরান (Iran) সীমান্তের কাছে অবস্থিত। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আধিকারিকরা বলছেন, এই বিপর্যয়ের কারণ খরা হতে পারে। বিশদে খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছেন তাঁরা।
ওই জায়গাটা টাইগ্রিস (Tigris) নদীর প্লাবনভূমির অন্তর্গত যেখানে রয়েছে বিখ্যাত জলাভূমি। কিন্তু সমগ্র অংশটাই বিশ্ব উষ্ণায়নের কবলে পড়েছে। ইরাকের কৃষিমন্ত্রক রবিবার জানিয়েছিল, বিপুল সংখ্যক মাছের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
পরিবেশ কর্মী আহমেদ সালেহ নিমা জানিয়েছেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াতে নদীর জল বাষ্পীভূত হচ্ছে বেশি পরিমাণে, নদীর জল কমে যাওয়ার কারণে দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের অভাব। সেই সঙ্গে বেড়ে গিয়েছে জলে নুনের পরিমাণ। এইসব কারণেই মারা যাচ্ছে মাছ বলে তাঁর মত।
আরও পড়ুন: AI Robots | মানুষের চাকরি কাড়ব না, বিদ্রোহও করব না, রাষ্ট্রপুঞ্জে ‘প্রতিশ্রুতি’ এআই রোবটদের!
প্রধানত শুষ্ক দেশ ইরাককে জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) কারণে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি দেশের একটা বলে ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ (United Nations)। গ্রীষ্মে গায়ে ফোস্কা পড়ার মতো তাপ এবং প্রায়ই ধুলোর ঝড় ওঠে। গত চার বছর ধরে বৃষ্টির পরিমাণ কমে গিয়েছে এবং উপরদিকের জলাধার থেকে কম জল ছাড়া হয়েছে টাইগ্রিস এবং ইউফ্রেটিস (Euphrates) নদীতে। অদৃষ্টের কী নিদারুণ পরিহাস! বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতা মেসোপটেমিয়া (Mesopotamia) গড়ে উঠেছিল এই দুই নদীকে কেন্দ্র করেই।
ইরাকের পরিবেশ মন্ত্রকের আধিকারিক খোদর আব্বাস সলমন বলছেন, “এই এলাকার নদীর অবস্থা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখলাম, অক্সিজেনের পরিমাণ শূন্য।” সোমবার মাছ-মৃত্যুর তদন্তে যোগ দিয়েছেন এই আধিকারিক এবং জানিয়েছেন, আমশান নদীতে নয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। সেই মাছেরা এখনও মরে চলেছে। মাছ এবং নদী, দুই থেকেই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, কোনও রকম রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে জলে লবণাক্ত ভাব বেড়ে যাওয়ায়ি মাছের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট কারণ। ওই জল সেচের কাজেও ব্যবহার করা যাবে না, তাতে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যাবে। সলমনের আশঙ্কা নদীতে দূষণ আরও বাড়তে পারে। কারণ যত মাছ বা প্রাণীর মৃত্যু হবে তত বিষাক্ত এবং দূষিত হয়ে উঠবে জল।