কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: সরষে গাছের মত দেখতে। সহজেই বীজ থেকে চারাগাছ হয়ে উঠতে পারে। টিকে থাকতে পারে প্রতিকূল আবহাওয়ায়। বৈজ্ঞানিক নাম অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা। ভবিষ্যতে চাঁদ এবং মঙ্গলের আবহাওয়ায় এই প্রজাতির বিভিন্ন উদ্ভিদকে পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ করতে চলেছে মানুষ। নাসার গবেষণায় অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন বৈজ্ঞানিকরা।
কিন্তু চাঁদে বা মঙ্গলে তো পৃথিবীর মত মাটি নেই। জলও আছে কী? যা যা তথ্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে তা থেকে বিজ্ঞানীদের অনুমান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে জল আছে। রোবটযান পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানে। কিন্তু চাঁদের যে ভুমি, তা তো রুক্ষ, ক্রেটারে ভরতি। সেখানে উদ্ভিদ জন্মাবে কীভাবে?
অ্যাপোলো অভিযানের সময় থেকেই এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু। চাঁদের জমির উপরিভাগে ছড়ানো নুড়ি-পাথর ধুলোর মত পদার্থগুলিকে সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। যার পোশাকি নাম লুনার রেগোলিথ। রেগোলিথ বা ধুলোপাথর। চাঁদের একাধিক অংশ থেকে এক এক ধরনের ধুলোপাথর বিভিন্ন সময়ে সংগ্রহ করা হয়েছে। নাসার গবেষণায় এই ধুলোপাথরের বুকেই জন্ম নিয়েছে সরষে প্রজাতির চারাগাছ। অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা। এ এক অভিনব সাফল্য।
সৌজন্যেঃ নাসা টুইটার (NASA)
কিন্তু কীভাবে চাঁদের ধুলোপাথরে জন্ম নিল সবুজ চারাগাছ? অ্যাপোলো ইলেভেন, টুয়েলভ্ এবং সেভেনটিন। এই তিন অভিযানে সংগৃহীত চাঁদের ধুলোপাথর পরীক্ষাগারে ব্যবহার করেছেন বিজ্ঞানীরা। মাত্র এক গ্রাম ধুলোপাথর একটি চারার বেড়ে ওঠার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। তাতে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজন মত জল এবং বীজ। এরপর রেখে দেওয়া হয়েছে আলাদা আলাদা বাক্সের ভিতর। আলোবাতাস চলাচল করে এরকম ঘরে রাখা হয়েছে সেই বাক্সগুলি। দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় জলীয় খাবার।
আরও পড়ুন Guinness World Records: কলকাতা টিভি ডিজিটালের খবরের জের, অতিকায় মহিলা সিদ্দিকার পাশে প্রশাসন
দু’দিনের মধ্যেই অবাক কাণ্ড। বীজ থেকে অঙ্কুর ফুটে ওঠে। তবে ছ’দিন পর দেখা যায় চাঁদের ধুলোপাথরে বড় হয়ে ওঠা চারা ততটা শক্তপোক্ত গঠনের নয়। বড় হয়ে ওঠার চরিত্রটিও আলাদা। চাঁদের ধুলোপাথরে বীজ থেকে চারা হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াটি হয়েছে অনেক ধীর গতিতে। চারাগুলির শিকড়ও আঁকাবাঁকা। কয়েকটি চারার পাতার গঠনও আলাদা। কোনও কোনও পাতার গায়ে লাল রংয়ের ছোপ।
ভাবতে ভাল লাগে সূদূর সময়ের কোনও মানুষ চাঁদ বা মঙ্গলে পৌঁছে টিকে থাকার জন্য চাষবাস করছেন। মহাকাশচারীরা চাঁদেই স্টেশন বানিয়ে আরও কোনও দূর গন্তব্যের খোঁজ করছেন। বোঝার চেষ্টা করছেন ভবিষ্যৎ সময়কে।
আরও পড়ুন Coal: কয়লা চুরিতে বাধা, গ্রামবাসীদের পাথর ছুড়ে মার, আক্রান্ত নিরাপত্তাকর্মীরা
