প্যারিস : একের পর এক হত্যাকান্ড। প্রত্যেকটা হত্যার পেছনে রয়েছে একটি নাম, ‘লে গ্রুলে’। খুনি এই নাম নিয়েই ৮০ থেকে ৯০ দশক পর্যন্ত প্যারিস জুড়ে চালিয়েছিল নিজের হত্যালীলা। পুলিশ তদন্ত চালিয়েও কোনও খুনের ঘটনারই কিনারা করতে পারেনি। পুলিশের অনুমান ছিল, এই হত্যাগুলি কোনও সিরিয়াল কিলারের কাজ। অবশেষে এই সিরিয়াল কিলারের আত্মহত্যার মধ্যে দিয়েই প্রকাশ্যে এল তার আসল পরিচয়।
সম্প্রতি প্যারিসের একটি ফ্লাট থেকে উদ্ধার হয় ফ্রাঙ্কোয়া ভেরোভ (৫৯) নামে এক প্রাক্তন পুলিশ কর্মীর দেহ। মৃতদেহের কাছ উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট, যেখানে ফ্রাঙ্কোয়া লিখে রেখেছিলেন তার স্বীকারোক্তি। প্যারিসে ৮০ থেকে ৯০-এর দশকে যে খুন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল, তার মূল অভিযুক্ত ছিলেন তিনি। লে গ্রুলে নাম নিয়েই ফ্রাঙ্কোয়া খুন ও ধর্ষণ করত। এরপর প্রায় ৩৫ বছর ধরে তিনি পরিচয় গোপন করে ছিলেন।
আরও পড়ুন : চার বছরেও বিচার পেলেন না গৌরী লঙ্কেশ
পাবলিক প্রসিকিউটর লর বেকুয়াউ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ৯০’র দশকে ফ্রাঙ্কোয়া যে সব অপরাধ করেছিল, সেই অপরাধের স্থান থেকে পাওয়া নমুনার ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ ও তদন্তকারীরা প্রত্যেকটি খুনের মধ্যে একটি মিল খুঁজে পায়। প্যারিসের সবচেয়ে কুখ্যাত মামলা ছিল সিসিল হত্যাকান্ড। সিসিল নামে একটি ১১ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। ১৯৮৭ সালে প্যারিসের মারাইস জেলায় এক দম্পতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনা ঘটে। এই দুটি ঘটনার তদন্ত চালায় পুলিশ। কিন্তু খুনের কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি। এই ঘটনাগুলির সময় যার পুলিশের কাজে প্যারিসে মোতায়েন ছিল, সম্প্রতি তাদের জিজ্ঞেসাবাদ শুরু করে তদন্তকারীরা। তাদের মধ্যেই একজন ছিলেন ফ্রাঙ্কোয়া ভেরোভ। ২ সেপ্টেম্বর জিজ্ঞেসাবাদের জন্য তাকে তলব করা হয়। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী জানান, ফ্রাঙ্কোয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর দু’দিন বাদে গ্রাডু-রয়ের একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ফ্রাঙ্কোয়ার দেহ। সেই সঙ্গে উদ্ধার হয় তার সুইসাইড নোট, যেখানে সে তার সকল অপরাধের কথা লিখে রেখে গেছেন।