ওজন কম করতে শুধু শরীরচর্চাই যথেষ্ট নয়, শারীরিক কসরতের পাশাপাশি প্রয়োজন সঠিক আহারের। কিন্তু একদিকে যেমন ওজন কমানোর হিড়িকে এই খাবারের সঙ্গেই আপোস করেন অনেকে। অন্যদিকে আবার কেও কেও নিত্য নতুন ডায়েট প্যাটার্ন ফলো করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। ফিটনেস জার্নির প্রথম কটা দিন শরীর ও মন চনমনে থাকলেও যত দিন যায় তত কঠিন হয়ে পড়ে এই ফিটনেস জার্নি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ভারতের মতন দেশে স্থুলতার হার বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যান্য কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হল আমাদের খাদ্যাভ্যাস।
আর দিনে কখন, কীভাবে, কতটা পরিমাণ ক্যালোরি আমাদের শরীরে যাচ্ছে তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে ওজন বৃদ্ধি কিংবা ওজন কমের প্রক্রিয়া। তাই নিত্য নতুন ডায়েট প্যাটার্ন মেনে নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় বড়সড় বদল আনলে অনেক সময় বিপরীত পরিণাম হতে পারে। এই ধরনের ডায়েট প্যাটার্ন খাবারের প্রতি আপনার আশক্তি কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। এতে বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। বারবার খাবারের ইচ্ছা জন্মাতে পারে।
তবে শুধু কি খাচ্ছেন সেটা একা নয় ওজন কমাতে সমান গুরুত্বপূর্ণ কখন খাচ্ছেন। স্পেনের মুর্সিয়া বিশ্ববিদ্যলয়ের তরফ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে সঠিক সময়ে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনার খেলে তার একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরে। এর ফলে মেটাবলিজম বা পাচনতন্ত্রের প্রক্রিয়া, ওজন, ও স্থুলতা এবং এর কারণে একাধিক শারীরিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ব্রেকফাস্ট ও ডিনারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা
ওজন কমাতে দিয়ে অনেকে যেমন খাবারের সঙ্গে আপোস করে বসেন অনেকে আবার কী খাবেন ও কী খাবেন না এই নিয়ে এত মেতে ওঠেন যে দিনের প্রধান আহারগুলি খাওয়ার সময় ঠিক থাকে না। এদিকে দিনের এই প্রধান খাবারগুলি থেকে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি শুষে নিয়ে নানা ক্রিয়া প্রক্রিয়ার কাজে লাগায় এবং শক্তির সঞ্চার করে। এর ফলে গোটা দিন আমাদের শরীর চনমনে থাকে। তাই ঘুমোত যাওয়ার আগে ও পরে আমরা কি খাবার খাচ্ছি এবং কখন খাচ্ছি সেগুলির মধ্যে ভারসাম্য রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ভারসাম্য বজায় না থাকলে শরীরে কার্যক্ষমতা হ্রাস পাবে।
আরও পড়ুন : Kolkata Suicide: রোগা হতে না পেরে ১১ তলা থেকে ঝাঁপ কোটিপতি ব্যবসায়ীর
কীভাবে বজায় রাখবেন এই ভারসাম্য জেনে নিন-
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছে সকাল সাতটা নাগাদ হেভি ব্রেকফাস্ট করে ফেলা ভাল। এটা শরীরের ফ্যাট বা মেদ জমার প্রবণতা কম করে ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। এতে ঘন ঘন খিদে পায় না।
সকালের খাবার: খাবার যাতে পুষ্টিকর হয় তার জন্য খেতে পারেন পাউরুটির সঙ্গে ডিম খেতে পারেন। আবার দই বা ইয়গহার্ট দিয়ে মাল্টিগ্রেইন জাতীয় কোনও খাবার খেতে পারেন। চিরের পোলাও বা নারকেলের চাটনি দিয়ে ধোসা খেতে পারেন। আবার গ্লুটেন অ্যালার্জি থাকলে সেইমতো খাবারের পরিবর্তন করতে পারেন। তবে যাই খান তাতে যেন পুষ্টিকর হয়। পাশাপাশি পেট ভরে খাবার খেতে হবে।
রাতের খাবার: রাতে সাধারণত মেটাবলিজমের গতি কমে আসে। তাই খাবার ভাল করে হজম করতে রাত আটটার মধ্যে খাবার খেয়ে নেওয়া ভাল। এতে খাবার হজম হওয়ার অনেকটা সময় পাওয়া যাবে। রাতে চেষ্টা করুন খুব বেশি তেল মশলা যুক্ত খাবার এড়িয়ে যেতে। খাবারের পরিমাণের দিকেও নজর রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুপ, গ্রিল্ড চিকেন ও ফিশ খেতে পারেন। আবার এক বাটি স্যালাড খেতে পারেন। এছাড়া মাল্টিগ্রেন আটার তৈরি রুটির সঙ্গে পালক পনির কিংবা অল্প মশলায় রান্না করা কাবুলি ছোলা খেতে পারেন।
(ছবি সৌ: NBC)