রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কমপক্ষে দু’মিনিটের হাঁটা অত্যন্ত জরুরি বলছেন বিজ্ঞানীরা। হাঁটার মতো যে কোনও এক্সারসাইজ হয় না তা এই নিয়ে একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে বহুবার। তা আপনি সকালে হাঁটুন, বিকেলে কিংবা রাতে, নিয়মিত হাঁটার উপকারিতা আজ আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। তবে সাম্প্রতিকালে এই নিয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে রাতে খাবার খাওয়ার পর অন্তত দু’মিনিট হাঁটলে শরীরের একাধিক সমস্যা যেমন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিশেষ করে টাইপ টু ডায়বিটিসের মতো গুরুতর অসুখকে দূরে রাখে।
সম্প্রতি, বসে থাকা বা দাড়িয়ে থাকা কিংবা হাঁটার সময়ে হার্টের স্বাস্থ্য ও রক্তে শর্করার মাত্রা কেমন থাকে তা নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান রাতের খাবার খাওয়ার পর নিয়মিত হালকা চালে হাঁটলে তা ডায়বিটিস ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে ডায়বিটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে যদি এই ডায়বিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা না হয় তা হলে হার্টের একাধিক সমস্যা যেমন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি কিংবা লিভার ফেলিওরের মতো প্রাণঘাতি পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
হাঁটার উপকারিতা পেতে…
সকাল, বিকেল কিংবা রাতে নিয়মিত হাঁটা শরীরের জন্য বেশ উপকারই। তবে রাতের খাবার খাওয়ার প্রায় ৬০ থেকে ৯০ মিনিট পর খানিকক্ষণ হাঁটলে তা সব থেকে বেশি উপকারী। কারণ, খাবার খাওয়ার পর রক্তে আচমকা শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় অনেকটাই। তাই রাতে খাবার খেয়ে হাঁটার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা আসতে আসতে নিয়ন্ত্রণে আসে। এর পাশাপাশি চিকিত্সকদের পরামর্শ অফিস বা বাড়িতে এক টানা বসে কাজের ফাঁকে মাঝে মধ্যেই একটু হেঁটে নেওয়া দরকার। এতে অলস ভাবও দূর হয় শরীরও ভাল থাকে।
হার্ট ভাল রাখা ও ডায়বিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি এই সব ক্ষেত্রেও হাঁটা উপকারী-
গ্যাস ও পেটের ফোলাভাব কম করে
পেটের একাধিক সমস্যা যেমন গ্যাসের ব্যথা, ফোলাভাব কিংবা আইবিএসের সমস্যায় নিয়মিত হাঁটা বেশ উপকারী। গবেষকরা জানাচ্ছেন হাঁটলে শরীরের যে মুভমেন্ট হয় তার ফলে পাচনক্রিয়ার কাজ সহজ হয়। খাদ্যনালী হয়ে পর পর যেভাবে খাবার পাচকতন্ত্রে পৌঁছায় সেই প্রক্রিয়া সহজ হয়।
মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখে
হাঁটলে স্ট্রেস হরমোন যেমন অ্যাড্রেনেলিন ও কর্টিসল নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর ফলে ভাল থাকে মানসিক স্বাস্থ্য। স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি ও ডিপ্রেশন দূর করা যায়।
ঘুম নিয়ন্ত্রণে রাখে
অভ্যেসবশত কিংবা অসুস্থতার কারণে যাঁরা ইনসোমিনিয়াতে ভোগেন তাঁরা নিয়মিত হাঁটার অভ্যেস করলে ভালো ফল পাবেন। ঘুমের অভাবের কারণেই একাধিক শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
নিয়মিত হাঁটলে শরীরের রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো সমস্যা হবে না।