একদিকে ওমিক্রন অন্যদিকে তাপমাত্রার পারদের ওঠানামা, এর মধ্যে নিজেকে ও পরিবারকে সুস্থ রাখতে দিনের শুরুটাই যদি স্বাস্থ্যকর কিছু দিয়ে করা যায় তা হলে গোটা দিন শরীর নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। এমন কিছু যা ডিটক্সিফাই করে শরীরে শক্তির সঞ্চার করতে পারে। এরকম কিছু চাইলে সকাল শুরু করতে পারেন গুড়ের তৈরি এই দুর্দান্ত পানীয় খেয়ে। গুড় চিনির মতো এম্পটি ক্যালোরি (empty calorie) খাবার না বরং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিকর উপাদান(nutrients)।
কীভাবে বানাবেন গুঁড়ের এই পানীয় জেনে নিন-
উপকরণ
গুঁড়(jaggery)
চিয়া সিডস (chia seeds)
পাতিলেবু(lemon)
পুদিনা পাতা(mint leaves)
কীভাবে তৈরি করবেন এই পানীয়?
প্রথমে গুঁড় এক বাটি জলে গরম করে ফুটিয়ে নিন যতক্ষণ পর্যন্ত গুঁড় পুরো গলে যাচ্ছে না ততক্ষণ অপেক্ষা করুন।
এরপর এই গুঁড় জল ঠান্ডা হতে দিন। দশ থেকে পনেরো মিনিট অপেক্ষা করুন। জল ঠান্ডা হয়ে গেলে এতে ৩ থেকে ৪ টে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণ অন্তত আরও আধ ঘন্টা ঠান্ডা হতে দিন।
এরপর এই জল খাওয়ার আগে ভাল করে গুলে নিয়ে ছেঁকে নিন। স্বাদ বাড়াতে এতে চিয়া সিডস(chia seeds) ও পুদিনা পাতা(pudina leaves) মেশাতে পারেন।
কেন খাবেন এই গুঁড় জল?
যোগা গুরু অভনি তালসানিয়া এই নিয়ে তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে করেছেন। সেখানে ইষদুষ্ণ জলে আখের গুড়ের সরবত্ খাওয়ার উপকারিতা জানিয়েছেন তিনি। তবে এই গুঁড় জল খাওয়ার চল নতুন কিছু নয়। আয়ুর্বেদেও গরম জল ও গুঁড় খাওয়ার ওপর বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই পানীয় অনেকটা প্রতিষেধকের কাজ করে। সকালে খালি পেটে এই গুঁড় জল খেলে শরীরের ন্যাচারাল ডায়জেসটিভ এমজাইম বৃদ্ধি পায়। এর ফলে হজমপ্রক্রিয়া ভাল হয় এবং দ্রুত হয়। এর পাশপাশি কিডনির নানা রকমের সমস্যা থাকলে সেই ক্ষেত্রেও এই গুঁড় জল বেশ কার্যকরী।
গুঁড় কেন এত উপকারী
গুঁড়ে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি রয়েছে। এই সব পুষ্টি শীতকালে ঠান্ডা লেগে কিংবা সর্দি-কাশি কিংবা জ্বরের সমস্যার উপশম করে।এতে প্রচুর পরিমানে ফেনোলিক উপাদান রয়েছে এটা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস (শরীরের অক্সিজেনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া) কমিয়ে শরীরকে আরাম দেয়।
শীতকালের নানা রকমের সংক্রমণ রুখতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
শ্বাসনালীর স্বাস্থ্য ভাল রাখে। ফুসফুস, খাদ্যনালী, পেট ও অন্ত্র পরিষ্কার করে।
গুঁড়ে প্রচুর পরিমানে ফাইবার থাকে। এই ফাইবার শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ নিকাশ করে হজমপ্রক্রিয়া ভাল করে তোলে।
শুধু ফাইবারই নয় প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিডেন্টও পাওয়া যায় গুঁড়ে। পাশাপাশি এতে রয়েছে জিঙ্ক, আয়রন, ফসফরাস, সেলেনিয়াম, পোটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি১, বি৬ ও সি।
গুঁড়ে পোটাশিয়াম যে অনুপাতে রয়েছে সেটা আমদের শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ও মিনারেলের স্তর ধরে রাখে এবং মেটাবলিজম বাড়িয়ে তোলে। শরীরে শক্তির সঞ্চার করে। ফলে ওয়ার্ক আউটের সময় ঘাম হয়ে ত্বকের বর্জ্য পদার্থ বেড়িয়ে যায়।