Placeholder canvas
কলকাতা রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ |
K:T:V Clock
বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষ-এর ১৩৭ তম জন্মবর্ষে কলকাতা টিভির শ্রদ্ধাঞ্জলী
দেবাশিস সেনগুপ্ত Published By:  • | Edited By: ঐন্দ্রিলা ঘোষ
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২২ অক্টোবর, ২০২১, ০৫:০৬:২২ পিএম
  • / ১০১৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By: ঐন্দ্রিলা ঘোষ

 দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর  এলাকার বাসিন্দা জনৈক রাখালদা। গল্প বলতে বলতে শিউরে উঠছিলেন।শিউরে ওঠারই তো কথা ,যারা শুনছিলেন তাঁদের গায়ের লোমও খাড়া হয়ে উঠছিল। শুরুটা এইভাবেই করেছিলেন রাখাল দা। দক্ষিণ কলকাতার কোন একজন বর্ষিয়ান রাজনৈতিক নেতা বলেছিলেন রাখাল ওমুক জায়গায়, যাও। দেখবে একটি ঘরে শীর্ণকায় একজন বয়স্ক মানুষ।ওনাকে প্রণাম করবে। উনি তোমাকে ছোবে না। কেন ছোবে না তুমি তাকে খুচিয়ে জানার চেষ্টা করে দেখতে পার।

যেমন কথা তেমনি কাজ। ৮০ দশকের একদিন দুপুরের দিকে বর্তমান কালিঘাট (কেওড়াতলা )মহাশ্বশানের বিপরীতের রাস্তা ছোট্ট একটি লেন,যার নাম রজনী ভট্টাচার্য লেন। বয়স্ক মানুষটির বাড়িতে গিয়ে হাজির রাখাল দা। গিয়েই প্রণাম করলেন ।বয়স্ক ভদ্রলোক মাথার উপর থেকে বেশ কিছুটা দূরত্ব রেখে আর্শীবাদ করলেন।রাখালদা বলে উঠলেন,পাপী বলে কি মাথায় হাত দিয়ে আর্শীবাদ করলেন না। এরকম দু একটি কথায় কথায় বলে ফেললেন বয়স্ক ভদ্রলোক ।

সালটা ছিল ১৯০১ ।স্বামী বিবেকানন্দের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করার সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর ।তারপর থেকে সেই হাত আর  অন্য কোথাও ঠেকাননি।এছাড়াও স্বামীজির সাথে ফরাসগঞ্জের মোহিনী মোহন দাসের বাড়িতে তার দেহ রক্ষী হয়ে পর্দায় ১৪/১৫  দিন থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল।সেই সময়ে স্বামীজি আর্শীবাদ করেছিলেন, মন্ত্র দিয়েছিলেন,দেশ স্বাধীন করার।

আরও পড়ুন বঙ্গে অস্থিত্ব সংকট, প্রায় ভুলে যাওয়া স্বাধীনতা সংগ্রামীকে স্মরণ সূর্যের

                                বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষেরর ভাড়া বাড়ি (রজনী ভট্টাচার্য লেনে)

হেমচন্দ্রের মুক্তি সংঘ পরে বেঙ্গল ভলেনন্টিয়ার্স (বি ভি পার্টি) তার বাণী ছিল বিপ্লবীদের ত্যাগ, শিক্ষা, নিয়মসূচিতা ও সাহস সঞ্চয় করে তাঁদের দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধ তরুণ প্রজন্মের পাথেয় হোক ,তাঁদের হৃদয় ও মানুষকে ভালোবাসার প্রবণতা সম্বল হোক।হেমচন্দ্রের আদর্শ ছিল বিবেকানন্দ।

‘দুর্গম পথের যাত্রী হও,নবরাগে চিত্তকে রঙ্গিন করে জাতির সর্বাঙ্গিন কল্যান সাধনে অগ্রদূত হও ।’পৃথিবীর যেখানে মত দরিদ্র মানুষ আছে,শোষিত মানুষ আছে,অবহেলিত মানুষ আছে সকলের বন্ধু ছিলেন বিবেকানন্দ,সাম্রাজ্যবাদের অত্যাচার , ঔপনিবেশিকতার শোষনের বিরুদ্ধে বজ্রকন্ঠে সরব ছিলেন বিবেকানন্দ।এটাই ছিল বিপ্লবী হেমচন্দ্রের মূলমন্ত্র। নেতাজি অত্যান্ত শ্রদ্ধাভাজন অগ্রজ নেতা হিসাবে মানতেন বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষকে। মাঝে অনেক কিছু ঘটে গেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেক রাজনৈতিক  ক্ষমতাশালীরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য বরাদ্দ পেনশন সহ অন্যান্য সুবিধা  নেওয়ার জন্য  অনুরোধ করেছিলেন হেমচন্দ্রকে। সকলের অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি । জিবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন স্বাবলম্বী।  বলেছিলেন  ‘আমরা দেশকে বিক্রি করিনি।’

হ্যাঁ, এই সেই বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষ।বিনয়,বাদল,দিনেশের বিপ্লবী কর্মকান্ডের দীক্ষাগুরু ছিলেন হেমচন্দ্র ঘোষ।সিমসন,ডগলাস,পেডি,লোম্যান, বার্জ ,হাটসনদের মত অত্যাচারী ইংরেজ শাসকদের শেষ করা হয় তাঁরই ইশারায়। কে সেই বিপ্লবী ? এই প্রজন্মের অনেকেই তাকে চেনেন না।

কেওড়াতলার মহাশ্বশানের পাশে শেষ জীবন যাপনের কারণই হল  যাতে মৃত্যুর পর ও তাকে  নিয়ে কাউকে ব্যাতিব্যাস্ত হতে না হয় , শ্বশানে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়,এমনটাই নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন পরিচিত কয়েকজনকে। ইনিই বাংলাদেশে বিপ্লবী গুপ্ত সমিতি ও তার প্রতিষ্ঠাতা বিপ্লবী নেতা হেমচন্দ্র ঘোষ।  যার হেড কোয়াটার  ঢাকায়।১৯০৫ সালে এই গুপ্ত সমিতির নাম হয় মুক্তি সংঘ।সেই সময়কার বিশ্বস্ত দলকর্মী ছাড়া সেই সংগঠনের নাম অপর কেউ জানতেন না একান্ত বিশ্বাসভাজন কর্মীদের গলায় তা গোপনমন্ত্রের মত উচ্চরিত হত।

                                            বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষের বাড়ি (নফর কুণ্ডু রোড)

আরও পড়ুন বিপ্লবী ভগৎ সিং আজও লড়ে যাচ্ছেন কৃষকদের সমর্থনে 

হেমচন্দ্রের সঙ্গে লড়াইয়ের সঙ্গী হতে যারা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম শ্রীশ পাল,হরিদাস দত্ত,রাজেন গুহ,ডা. সুরেশ বর্ধণ ,মুন্সি আলিমুদ্দিন আহমেদ,খগেন দাস প্রমুখ।

শোনা যায়, এই শ্রীশ পালই তৎকালীন কলকাতার আত্মোন্নতি সমিতির নেতা হরিশ শিকদার,বিপিন গাঙ্গুলিদের সাথে হেমচন্দ্রের পক্ষ থেকে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। যোগাযোগ রক্ষা করতেন যুগান্তর দলের নেতা যতীন মুখার্জির সাথে। আস্তে আস্তে দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠে মুক্তি সংঘ। ১৯০৮ সালের ৯ ই নভেম্বর,  এই দুই দলের প্রথম কাজ সার্পেন্টাইন লেনে নন্দলাল ব্যানার্জির হত্যা দিয়ে। নন্দলাল ব্যানার্জি  মুক্তি সংঘের কর্মী শ্রীশ চন্দ্র পাল,প্রফুল্ল চাকিকে গ্রেফতার করেছিলেন। সহায়ক ছিলেন আত্মোন্নতির রণেণ  গাঙ্গুলি।  মুক্তি সংঘ ও আত্মোন্নতির যৌথ কাজ ১৯১২ সালে জগদ্দল অঞ্চলের আলেকজান্ডার জুট মিলের বিলাতী ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট ওব্রায়েনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র।কারণ এই  বিলাতী ইঞ্জিনিয়ার সামান্য কারণে বাঙালি কেরানীকে পত্রাঘাতে মেরে ফেলেন। পরবর্তীকালে ঐ ইঞ্জিনিয়ারের অবশ্য তাতে ৫০ টাকা জরিমানা হয়েছিল। স্বদেশীর জীবনের মূল্য মাত্র ৫০টাকা? বদলা নিতে প্রস্তূত হয় বিপ্লবীরা, খগেন দাস ও হরিদাস দত্তকে ওব্রায়েনের গতিবিধির উপর নজরদারির দায়িত্ব দিয়ে জগদ্দলে পাঠানো হয়। প্রায় তিনমাস কুলির বেশে ঐ মিলে কাজ করেন তাঁরা। তৃতীয় কাজ, ১৯১৪ সালের ২৬ শে আগষ্ট।  রডা অস্ত্র সংস্হার অস্ত্র লুন্ঠন।   বিপ্লবীরা অস্ত্র স়ংগ্রহের জন্য মরিয়া । সেই সময় খবর আসে মার্জার পিস্তল ও প্রচুর গুলি আসছে রডা কম্পানীতে। হেমচন্দ্রের নেতৃত্বে সেই অস্ত্র লুঠ করার পরিকল্পনা করা হয়।

কাষ্টমস হাউস থেকে কার্তুজ ও গুলিভর্তি গাড়ি নিয়ে রডা কোম্পানির গোডাউনে আনার পথেই একটি গাড়ি বর্তমান মিশন রো হয়ে ব্রিটিশ ইন্ডিয়া ষ্ট্রিট হয়ে ,কারেন্সি অফিসের পাশে দিয়ে মালঙ্গা লেনে পৌঁছায়।যার নেপথ্যে ছিলেন শ্রীশ মিত্র। সেই অস্ত্র, বিপ্লবীদের হাতে তুলে দিয়ে প্রথমে দার্জিলিং,পরে আসামে গা ঢাকা দেন।তারপর থেকে আজ ও তাঁর হদিশ কেউ পায়নি।  দিনদুপুরে কলকাতার বুকে হরিদাস দত্ত,শ্রীশ পাল,খগেন দত্তদের এই অস্ত্র লুন্ঠন ব্রিটিশ শাসকদের রাতের ঘুম কেড়ে নেয়। ইংরাজরা শুরু করে বেপরোয়া ধরপাকর ।এই লুঠ করা অস্ত্র দিয়েই সারা দেশে বিপ্লবীরা ই়ংরাজদের বিরুদ্ধে শসস্ত্র লড়াই শুরু করে।

                                                   রডা কোম্পানির অস্ত্রগার

বাঘা যতীনের নেতৃত্বে বুড়িবলামের যুদ্ধ, বিনয়,বাদল ,দিনেশের সিমসন সাহেবকে হত্যার পরিকল্পনা,  ১৯৩০ সালের ৮ই ডিসেম্বর রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান  যার নেপথ্যে নায়ক ছিলেন বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষ। ‘বড়দা’র ১৩৭ তম জন্মবর্ষে কলকাতা টিভির পক্ষ থেকে রইল শ্রদ্ধাঞ্জলী।

 

 

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

উত্তরবঙ্গে ফের বিজেপি সাংসদের উপর হামলা, এবার টার্গেট রাজু !
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
দেড় কোটি টাকার বেশি দুর্নীতির অভিযোগ, জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল ইডি
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই গোর্খা ইস্যুতে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ! মোদিকে কড়া চিঠি মমতার
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জয় মোহনবাগানের
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
শিমুরালির এই জনপ্রিয় কালীপুজোর রীতি জানলে চমকে যাবেন, জানুন ৪০০ বছর আগের ইতিহাস
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
সতীর অভিশাপ! অদ্ভুত কারণে এই গ্রামে আজও পালিত হয় না দীপাবলি
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
কালীপুজোর চাঁদার টাকায় চলছিল দেদার মদ্যপান! হাতেনাতে ধরতেই কী হল?
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
মহারাষ্ট্রে পুণ্যার্থী বোঝাই গাড়ি পড়ল খাদে! মৃত ৮
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
পার্থ ম্যাচে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ কী? দেখে নিন
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
৫৬তম বর্ষে কৃষ্ণনগরের ক্লাব সাথীর শ্যামাপুজোয় এবছরের ভাবনা মায়ানমারের বৌদ্ধ মন্দির
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
টানা ১৩৬ দিন উঠবে না সূর্য! পৃথিবীতে কি সত্যিই নেমে এল অন্ধকার যুগ?
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
দীপাবলির দিন শেয়ার বাজারে হবে মুহুরৎ ট্রেডিং! কী এটি?
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
কালীপুজোর রাতে আরাধ্য অলক্ষ্মী! ঘটিবাড়ির প্রাচীন রীতিতে কেন বিদায় দেওয়া হয় দেবীকে?
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
‘আত্মনির্ভরতা’র উপর জোর, ভারতেই তৈরি হচ্ছে যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন!
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
কুমিরের সঙ্গে ১ ঘণ্টা লড়াই গৃহবধূর, তারপর কী হল?
শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team