মুখ ঢাকা মাস্কে। বিমানের মধ্যে মুঠোফোনের দিকে তাকিয়ে বসে আছেন বলি অভিনেত্রী। হাপুস নয়নে কাঁদছেন তিনি। কি এমন দেখছেন মুঠোফোনের পর্দায় বলি নায়িকা যে তার চোখে গড়িয়ে পড়ছে জল। নায়িকার ফ্যানক্লাবের তরফে প্রকাশ্যে আনা হয়েছে এমনই এক ভিডিও যা নেটিজেনদের মধ্যে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। কৌতুহলী প্রশ্ন নেট দুনিয়ায় ঘুরে বেরিয়েছে। কি দেখছেন বলি সুন্দরী? ইঙ্গিত পাওয়া গেছে নাকি ‘শেরশাহ’ ছবিতে নিজেরই স্যাড সিক্যুয়েন্সে অভিনয় দেখে তাঁর চোখে এই বাঁধভাঙ্গা জল। যা দেখে তাঁর ভক্ত নেটিজেনরা আবেগে ভেসেছে। হ্যাঁ, ফ্লাইট টেকঅফ করার আগে প্রয়াত উইং কমান্ডার বিক্রম বাত্রার জীবন নিয়ে তৈরি ‘শের শাহ’ ছবির অন্তেষ্টি দৃশ্যে কিয়ারা আদবানি নিজের কান্নার দৃশ্য দেখে এতটাই আবেগতাড়িতয হয়ে পড়লেন।
আরও পড়ুন: ‘শেরশাহ’ দেখে মুগ্ধ বাদশা
কারগিল যুদ্ধের শহীদ বিক্রম বাত্রা বীরত্ব আত্মহত্যা এবং প্রেমের গল্প মনকে ছুঁয়ে গেছে ভারতীয় দর্শকদের। পরিচালক বিষ্ণুবর্ধন এর এই ছবিতে ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার বাগদত্তা ডিম্পল চিমার চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিয়ারা। ছোট্ট চরিত্র কিন্তু নাড়া দিয়ে গেছে দর্শকদের। বিক্রম বার্তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিয়েল লাইফে কিয়ারার প্রেমিক সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। যার অভিনয় দেখে সকলেই মুগ্ধ। পর্দা বিক্রমের শেষকৃত্যে ডিম্পল এর বাঁধভাঙ্গা কান্না যেমন নাড়িয়ে দিয়েছে আপামর দর্শককে তেমনই নাড়িয়ে দিয়েছে এই চরিত্রের অভিনেত্রী কিয়ারাকেও। বিমানে বসে কিয়ারা নিজেকে ভুলে গিয়ে আরাকবার ডিম্পলের চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে প্রেম হয়েছিল বিক্রম-ডিম্পলের। বিয়ের তারিখ পাকা থাকলেও কারগিল যুদ্ধ ডিম্পলের জীবন থেকে চিরতরে কেড়ে নিয়েছিল তাঁরর মনের মানুষকে। সেদিনের সে আবেগ ২২ বছর পরেও ভুলতে পারেন নি ডিম্পল। থেকে গিয়েছেন অবিবাহিতই। এমনকি বিক্রমের বাবা-মা আত্মীয়-স্বজনেরও কোন আপদার আজও টলাতে পারেনি ডিম্পল। মুম্বইয়ের এক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিয়ারা জানিয়েছিলেন, এই ছবির গানগুলি নাকি ডিম্পলের মন ছুঁয়ে গেছে। কিয়ারা যখন বিক্রম বাত্রার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, পরিবারের লোকজন ওকে বলেছিল ‘আপনি একদম ডিম্পলের মতই’।যা শুনে কিয়ারার অন্যরকম শিহরন হয়েছিল।
আরও পড়ুন:‘শেরশাহ’-এ মাত করলেন সিদ্ধার্থ
একথা শুনে কিয়ারার চোখ জলে ভেসেছিল। কিয়ারা বলেন, আমি নিশ্চিত যে ডিম্পল গর্বিত হবে যে এই কাহিনী দেখে মানুষ নিজেকে একাত্ম করতে পেরেছে। বর্তমানে চণ্ডীগড়ে একটি স্কুলে শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করেন ডিম্পল চিমা। এভাবেই তিনি বিক্রমের স্মৃতি আঁকড়ে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে চান। কিয়ারা আরো জানান, একটা সময় আমি মুখ ফসকে ডিম্পলকে বলে ফেলেছিলাম, “অনেকগুলো বছর পার হয়ে গেল…. আমার কথার ইঙ্গিত বুঝতে পেরে উনি আমাকে পাল্টা বলেছিলেন, ‘আমি ওর ওপর একটু রেগে আছি, যেদিন দেখা হবে সেদিন সব মনোমালিন্য একসাথে বসে মিটিয়ে নেব…. আমি নিশ্চিত একদিন আমাদের দেখা হবে’।” যা শুনে সেদিনও কেঁদে ফেলেছিলেন কিয়ারা।