শান্তিনিকেন: লাল মাটির টানে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি-বিজড়িত শান্তিনিকেতনে সারা বছরই দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। করোনার প্রাদুর্ভাবের আগে অবধি পর্যটকদের প্রিয় জায়গা খোয়াই হাটেও ভিড় থাকতো চোখে পড়ার মতো। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে মুখ ফিরিয়েছেন পর্যটকরা।
আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের কর্মসংস্থানের নিরিখে এগিয়ে বাংলা
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাণের জায়গা শান্তিনিকেতন তাই আজ বড়ই নিষ্প্রাণ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে রাজ্যজুড়ে বিধি-নিষেধ জারি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই শান্তিনিকেতনে আসা বন্ধ হয়েছে পর্যটকদের। এর জেরে চিন্তার ভাঁজ ব্যবসায়ীদের এবং খোয়াই হাটের বাউল শিল্পীদের কপালে।
শান্তিনিকেতনে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের জায়গা শনিবারের ‘খোয়াই’-এর হাট। পর্যটকদের আশায় এই হাটে স্থানীয় হস্তশিল্পী সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা তাঁদের পসরা সাজিয়ে বসেন। বাউল শিল্পীরাও একতারাই সুর তোলেন। কিন্তু পর্যটকদের আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রুটি-রুজিতে টান পড়েছে তাঁদের।
আরও পড়ুন: উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউ অনলাইনে নয়, হবে অফলাইনে
গত বছর লকডাউন ওঠার পর থেকেই শান্তিনিকেতনে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়েছিল। ফলে তাঁদের মুখে চওড়া হাসি ফুটেছিল। কিন্তু ভোটের পর লাগামছাড়া করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলায় কড়া বিধি-নিষেধ জারি করে রাজ্য সরকার। তখন থেকেই পর্যটকরা আসা বন্ধ করে দেন।
এর আগে করোনার জেরে শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা ও বসন্ত উৎসব বন্ধ হওয়ায় সেসময়েও বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিল শান্তিনিকেতনের ব্যবসায়ী ও বাউল শিল্পীরা। আবার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের বিধি-নিষেধ জারি হওয়ায় প্রায় এক মাস বন্ধ খোয়াইয়ের হাট সহ শান্তিনিকেতনের অন্যান্য জায়গা।
আরও পড়ুন: ভারতে ডেল্টা প্লাসে আক্রান্ত বেড়ে ৪০
এর জেরে আবারও আর্থিক সঙ্কটে ব্যবসায়ীরা। এলাকার ব্যবসায়ী ও বাউল শিল্পীদের কেউ কেউ অন্য পেশা বেছে নিলেও অনেকেই আধপেটা থাকছেন। কেউ কেউ আবার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছ থেকে সাহায্য পাচ্ছেন। রাজ্য সরকারের তরফেও প্রয়োজনীয় সহায়তা মিলছে বলে জানান তাঁরা।
ব্যবসায়ী ও বাউল শিল্পীরা জানান, হাট বন্ধ হওয়ায় তাঁদের কোনও রোজগার হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের কাছে বিকল্প ব্যবস্থার আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা। আপাতত কবে আবার হাট খুলবে, কবে শান্তিনিকেতন নিজ ছন্দে ফিরবে, সেই দিকেই তাকিয়ে তাঁরা।