সাগর: শেষকৃত্য নাকি প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা! রাস্তায় সারি সারি ইঞ্জিন ভ্যানে লোকসমাগম। ব্যান্ডপার্টিতে বাজছে ‘আমি হেলেদুলে যাব শ্মশানে’ গান। সামনে নেচে চলেছে একদল যুবক। এভাবেই নাতিদের কাঁধে চড়ে শ্মশানের পথে চললেন বৃদ্ধা। ব্যান্ডপার্টি নিয়ে নাচ-গানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হল ১১৩ বছরের বনলতা খাটুয়ার। রাস্তার দুপাশে কৌতূহলী দৃষ্টিতে থমকে দাঁড়ালেন মানুষজন। বৃদ্ধার মৃত্যুতে পরিবার-পরিজন থেকে গ্রামবাসীরা তখনও নেচে চলেছেন। কাউকে দেখা গেল সেলফি নিতেও।
আরও পড়ুন: প্রাক্তন মাওবাদী হোমগার্ড ও শিশুপুত্রের দেহ উদ্ধার, রহস্য
শ্মশানযাত্রার এমন বিরল দৃশ্য ঘিরে হতবাক দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগর কোস্টাল থানার বিষ্ণুপুর এলাকার মানুষজন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম বনলতা খাটুয়া। পরিবারের দাবি, তাঁর বয়স হয়েছিল ১১৩ বছর। এই বৃদ্ধা নাকি বলেছিলেন, তাঁর ইচ্ছা শ্মশানযাত্রায় আনন্দ করে যেতে। তাই তাঁর বিদায় যেন সবাই আনন্দের সঙ্গে করে। ঠাকুমার শেষ ইচ্ছায় শ্রদ্ধা জানিয়ে নাতিরা আনলেন ব্যান্ডপার্টি। নেচে-গেয়ে ঠাকুমাকে বিদায় জানালেন তাঁরা। এমনকী শ্মশানের চিতায় যখন একদিকে আগুন জ্বলছে, তখনও ব্যান্ডপার্টি বেজে চলেছে। পরিজনরা বলেন, কত বছর ধরে পরিবারকে আগলে রেখেছিলেন বৃদ্ধা। বৃদ্ধার দুই ছেলের নাতি-নাতনি মিলে ৮ জন। তবু বড় পরিবারকে ভাঙতে দেননি তিনি। সবসময় সবাইকে হাসিখুশি দেখতে চাইতেন। তাই তাঁর মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন নয়, আনন্দে মেতে ওঠেন পরিজনরা। আর তাতে যোগ দিলেন কয়েকশো মানুষ। নাচতে নাচতে গোটা বিষ্ণুপুর থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত এলাকা পরিক্রম করে এই শ্মশানযাত্রা।
আরও পড়ুন: Baharampur Train Accident: বহরমপুরে ট্রেনের ধাক্কায় পুর চেয়ারম্যানের ভাইপোসহ ২ যুবকের মৃত্যু
মৃতার পৌত্র বিকাশ খাটুয়া বলেন, এত বয়স পর্যন্ত মানুষ এখন খুব কম বাঁচেন। সাগরে এই বয়সে এর আগে কেউ মারা গেছেন বলে আমার জানা নেই। ঠাকুমা এত বয়স ধরে চোখের সামনে অনেককে চলে যেতেও দেখেছেন। তাঁর মৃত্যুতে আনন্দ করছে গোটা পরিবারের সদস্যরা। এতটা সময় বেঁচে থেকে জীবনের সব স্বাদই বুঝেছেন। তাই আনন্দের সাথে ঠাকুমাকে বিদায় দেওয়া হচ্ছে।