বহরমপুর: মুর্শিদাবাদের গোরাবাজারে কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরি খুন হওয়ার পর ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহীদ সূর্য সেন রোডের মেসে। অনেক কলেজ ছাত্রীই ওই মেস ছেড়ে চলে যেতে চান বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন ছাত্রী আতঙ্কে মেস ছেড়ে চলে গিয়েছেন। স্থানীয় লোকজন সোমবার সন্ধ্যার সেই দৃশ্য এখনও ভুলতে পারছেন না। বেশ কয়েকজন যুবক দূর থেকে গোটা ঘটনাটি দেখেন। কিন্তু কেউ ভয়ে এগিয়ে আসেননি। সুশান্ত চৌধুরি নামে সুতপার ওই প্রেমিক, স্থানীয় যুবকরা কাছে এলে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। তার এক হাতে ছুরি এবং অন্য হাতে বন্দুক ছিল। যদিও রাতে পুলিস জানায়, বন্দুকটি ছিল নকল। ওই ছুরি দিয়েই বারবার সুশান্ত নৃশংসভাবে কুপিয়েছে সুতপার শরীরের বিভিন্ন অংশে। মঙ্গলবার অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরিকে মুর্শিদাবাদ জেলা আদালতে তোলা হয়।
সুতপার বাবা স্বাধীন কুমার চৌধুরি মঙ্গলবার জানান, সুশান্তও মালদহের ইংরেজবাজারেরই বাসিন্দা। ওর সঙ্গে মেয়ের অনেকদিন ধরেই সম্পর্ক ছিল। সুশান্ত ওর পড়াশোনার ক্ষতি করছিল। স্থানীয় কাউন্সিলরকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছিল। স্বাধীন জানান, তিনি মেয়ের পড়াশোনা শেষ হওয়া পর্যন্ত সুশান্তকে অপেক্ষা করতে বলেছিলেন। তারপর তার সঙ্গে বিয়ে দেবেন, এমনটাই জানিয়েছিলেন। তাঁর আরও অভিযোগ, সুশান্ত মেয়েকে ব্ল্যাকমেল করছিল। মেরে ফেলবে বলে হুমকিও দিচ্ছিল। সেকথা সুতপা টেলিফোনে স্বাধীনকে জানান। কিন্তু সত্যিই যে সুশান্ত এভাবে মেয়েকে খুন করবে, তা এখনও ভাবতে পারছেন না পেশায় স্কুল শিক্ষক স্বাধীন চৌধুরি।
আরও পড়ুন: Bengal Weather: বুধবার পর্যন্ত বঙ্গে স্বস্তির আভাস, পরে বাড়তে পারে তাপমাত্রা, জানাচ্ছে হাওয়া অফিস
পুলিস সূত্রের খবর, সোমবার রাতে স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবক দূর থেকে সুতপাকে নৃশংসভাবে কোপাতে দেখেন। দু-একজন কাছে যাওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু তাদের হুমকি দেয় সুশান্ত। সেই ভয়ে তাঁরা পিছিয়ে আসেন। সুতপাকে বারবার ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে সে। এমনকি রক্তাক্ত অবস্থায় তার পেটে একাধিকবার লাথিও মেরেছে। সুশান্ত পকেট থেকে মোবাইল বের করে তা ঘাঁটতে ঘাঁটতে একটা পাঁচিল টপকে পালায়। রাতেই সে ক্যাব ভাড়া করে মালদহে যাচ্ছিল। পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পারে, সে একাধিকবার ক্যাব পাল্টেছে। স্থানীয় কয়েকজনই দূর থেকে গোটা ঘটনার একটি ভিডিয়ো করে। তাতেই ওই নৃশংস দৃশ্য দেখা গিয়েছে। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি কলকাতা টিভি ডিজিটাল।
পুলিস মনে করছে, প্রেমে প্রত্যাখ্যানের কারণেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে সুশান্ত। সুতপার বাবাও স্বীকার করেছেন, প্রণয়ঘটিত কারণেই মেয়েকে খুন হতে হয়েছে।