মাজদিয়া: পাটিসাপটা কিংবা সিদ্ধ পিঠে। অথবা গরমাগরম রুটি বা পরটা দিয়ে ঝোলা নলেন গুড়। সোনালি রংয়ের ঘন রসের প্রতি ফোঁটায় যেন লেগে থাকে অমৃতের স্বাদ। শীতে কেক-পেস্ট্রি যতই থাক, বাঙালি রসনায় খেজুর গুড়ের চাহিদা অনেক বেশি। পিঠেপুলি হোক বা পায়েস অথবা নলেন গুড়ের সন্দেশ, রসগোল্লার তুলনা হয় না। ধীরে ধীরে জাঁকিয়ে শীত পড়ছে। শীত যত বাড়বে, ততই খেজুর রসের চাহিদা বাড়বে।শীতের আগমনীতেই অভাবের কুয়াশা কাটিয়ে রোজগারের আশার আলো শিউলিদের মুখে।
কাঁটায় ভরা খেজুর গাছের কাণ্ড চেঁচে রস বের করা এক বিশেষ দক্ষতার কাজ। এই কাজ যাঁরা করেন, তাঁদের শিউলি বলে। ধীরে ধীরে এই কাজ জানা লোকের সংখ্যা কমছে। যে কজন এখনও করে চলেছেন, শরতের শেষ থেকেই সেই শিউলিদের মুখে হাসি ফুটে ওঠে।
আরও পড়ুন : Jaggery and winter: শীতকালে কেন খাবেন গুড়?
নদিয়ার মাজদিয়ায় শিউলিরা এখন ব্যস্ত খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করতে। গতবছর করোনা এবং ঝড়ঝঞ্ঝার কারণে সেভাবে খেজুরের রস শিউলিরা সংগ্রহ করতে পারেননি। এমনকী মাজদিয়ার গুড়ের হাট ব্যাপারিরাও আসতে পারেননি। কারণ ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল, তেমনই পরিবহণ ঠিকমতো না চলায় রোজগারে মার খেয়েছেন শিউলিরা।
তাই এবার আবার বাজার জমে উঠেছে কৃষ্ণগঞ্জ মাজদিয়া গুড়ের হাটে। বিকেল বেলায় খেজুর গাছ কেটে সন্ধে হতেই মাটির হাঁড়ি ঝুলিয়ে আবার ভোর হওয়ার আগেই তা সংগ্রহ করে নিয়ে বাড়িতে জাল দিচ্ছেন গুড়। তৈরি হচ্ছে নলেন গুড় এবং পাটালি। বর্তমানে মাজদিয়া গুড়ের হাটে নলেন গুড় কিলো প্রতি ১৩০-১৪০ টাকা আর পাটালি ২০০ টাকা কিলো।
আরও পড়ুন : Types of jaggery and benefits: কোন গুড় শরীরের জন্য ঠিক কতটা উপকারী জানেন কি?
নদিয়ার মাজদিয়ার গুড়ের হাটে জেলা এবং কলকাতা থেকে পাইকাররা আসছেন গুড় কিনতে। এখন পৌষ মাস। বাঙালির ঘরে ঘরে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এখনো পিঠেপুলি প্রস্তুত করেন বাড়ির মহিলারা। তাই সুস্বাদু নলেন গুড়ের চাহিদাও শিউলিদের মনে এবার ভালো উপার্জনের আশার আলো দেখাচ্ছে।