কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: জেলায় জেলায় দ্রুত হারে বাড়ছে করোনা (COVID-19) আক্রান্তের সংখ্যা। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও রেহাই পাচ্ছেন না চিকিৎসক এবং নার্সরা। জেলার হাসপাতালগুলি থেকে প্রায়ই ফ্রন্টলাইন কর্মীদের আক্রান্তের খবর আসছে। চিকিৎসা করে, তাঁদের পরিষেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসকরা। যার ফলে ভেঙে পড়ছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকছে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ। অসুস্থ শরীর নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা।
করোনার দাপটে প্রসূতির অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে গেল হুগলির তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে। মঙ্গলবার এক প্রসূতির অস্ত্রোপচারের কথা থাকলেও দুজন অ্যানাস্থেটিস্টের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ায় অপারেশন বিভাগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। ভর্তি থাকা এক প্রসূতির করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাঁকেও স্থানান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনি— এই তিন দিন সিজার হয় তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে। আগামী এক সপ্তাহ সিজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও অন্য সব বিভাগ খোলা আছে বলে জানিয়েছেন তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপসকুমার দাস।
চিকিৎসকদের কোভিড পজিটিভ হওয়ার ঘটনায় বনগাঁ হাসপাতালেও বন্ধ সার্জিক্যাল বিভাগ। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ১০ জন চিকিৎসক এবং ১০ জন নার্স করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে সার্জিক্যাল বিভাগের ২ জন চিকিৎসক আছেন। সার্জিক্যাল বিভাগের মোট ৩ জন জন চিকিৎসকের মধ্যে ২ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে বহির্বিভাগ বন্ধ রয়েছে। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল সুপার শংকরপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ২ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আপাতত বহির্বিভাগ বন্ধ করতে হয়েছে।
আরও পড়ুন : করোনা আক্রন্ত ২৯ চিকিৎসক, বেহাল দশায় ক্যানিং হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ
বাঁকুড়া জেলায় করোনার গ্রাফ বাড়ছে। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৭০ জন চিকিৎসক এবং ৬৩ জন নার্সিং স্টাফ করোনা পজিটিভ। তাঁরা হোম আইসোলেশনে রয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এত বিপুল হারে চিকিৎসক ও নার্সিং স্টাফের করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সঠিক পরিষেবা দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা হাসপাতালে কোভিড আক্রান্ত ১৭ জন চিকিৎসক এবং ৫০ জনের বেশি নার্সিং স্টাফ ও কর্মী। এমনটাই জানালেন রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শোভন দে। তিনি জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা হাসপাতালের ১৭ জন চিকিৎসক এবং ৫০ জনের বেশি নার্সিং স্টাফ ও অফিস স্টাফ মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০০ ছাড়িয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় সেখানেও চিকিৎসা পরিষেবার বেহাল দশা।