বসিরহাট : বসিরহাট মহকুমার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত সৈয়দপুর গ্রামের রায়চৌধুরী পরিবারের পুজো এবারে ৩০০ বছরে পড়ল। রায় চৌধুরী বাড়ির পুজো আজও ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে চলেছে। রায়চৌধুরীদের পূর্বপুরুষরা বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ থানার নুর গ্রামে বসবাস করতেন। সেখান থেকেই তাঁরা তাঁদের জমিদারি চালাতেন। দেশভাগ হওয়ার পর তাঁরা বাংলার টাকির সৈয়দপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। রায়চৌধুরী বাড়িরই প্রথম পুজো শুরু করেছিলেন উপেন্দ্রনাথ রায়চৌধুরী। বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরী।
আরও পড়ুন : পুজোর আগে স্বস্তি জঙ্গল পর্যটনে, করোনা বিধি মেনে খুলছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল
এক সময় ওপার বাংলা থেকে দেবীকে উৎসর্গ করতে ইছামতি নদী পেরিয়ে রায়চৌধুরী বাড়ির পুজো মণ্ডপে আসত মহিষ, আতপ চাল, চিনি প্রভৃতি। দুই বাংলার বহু সংস্কৃতি ও প্রাচীন ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে এই পুজোকে ঘিরে। এই পুজোর আরও একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল নবমীর দিন পুজোর দালানে দেবীর ঘট বসানো হয় এবং বিসর্জন পর্যন্ত সেই ঘট দালানেই বসানো থাকে। আগে নবমীর দিন মহিষ বলি হত। সেই মহিষ আসতো বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু বর্তমানে মহিষের পরিবর্তে পাঠা বলি দেওয়া হয়। বর্তমানে রায়চৌধুরী বাড়ির সদস্যরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করেন। কিন্তু পুজোর এই কটা দিন সবাই এসে জড়ো হয় তাঁদের পৈত্রিক বাড়িতে। পরিবারের সকল সদস্যরা পুজোর কটা দিন আনন্দ উৎসবে মাতেন। খাওয়া-দাওয়া নাচ গান ও কবিতার মধ্যে দিয়ে নিজেদের সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলেন। ওপার বাংলার দর্শনার্থীরাও পাসপোর্ট করিয়ে চৌধুরী বাড়ির পুজো দেখতে আসেন। টাকির রায়চৌধুরী বাড়ির পুজো আজও দুই বাংলার সংস্কৃতির মেলবন্ধনের নিদর্শন হয়ে রয়েছে।