আলিপুরদুয়ার : ফের ভালুকের (Bear) দেখা মিলল ডুয়ার্সে (Dooars)। আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) শহর সংলগ্ন মাঝেরডাবরি চা বাগান (Tea garden) এলাকার কালকূট ও পানিয়ালগুড়ি বনবস্তির পাশে চা পাতা তোলার সময় ভালুকটিকে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন চা শ্রমিকরা। বন্ধ হয়ে যায় কাজ। শুক্রবার সাত সকালে চা বাগানে ভালুক আসার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভিড় জমান উৎসাহী জনতা। পরে বনদফতরকে খবর দেওয়া হলে তারাই ভালুকটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করার জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানায় বনদফতর।
আরও পড়ুন : ডুয়ার্সে ফের ভালুকের আতঙ্ক, সচেতনতায় প্রচার বনবিভাগের
গত ২৪ নভেম্বর ডুয়ার্সের মেটেলি চা বাগানে চলে আসা একটি ভালুকের ছবি তুলতে গিয়ে সেই ভালুকের আক্রমণে মৃত্যু হয় এক কিশোরের। পরে উত্তেজিত জনতা ভালুকটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে বনদফতরের আবেদনে মাঝেরডাবরি চা বাগানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এলাকাটিকে ঘিরে ফেলে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে আনা ২ টি কুনকি হাতির সাহায্যে শুরু হয় ভালুক খোঁজার পালা। শেষ পর্যন্ত টানা ৪ ঘন্টার চেষ্টায় ৩ বছর বয়সের ভালুকটিকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে পাকড়াও করা হয়। তার আগে কালকূট বমবস্তিতে একটি বাছুরকে জখম করেছিল ভালুকটি। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর লোকালয়ে চলে আসা ভালুকটিকে প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বনাধিকারিকরা।
আরও পড়ুন : ভালুকের হামলায় স্কুল ছাত্রের মৃত্যু, বন্য জন্তুকে পিটিয়ে মারল জনতা
বারবার লোকালয়ে ভালুকদের আনাগোনা চিন্তায় ফেলেছে বনদফতরকে। কারণ এর আগে কালেভদ্রে জনপদে ভালুকের দেখা মিললেও চলতি বছরে সেই প্রবণতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। দার্জিলিং থেকে শুরু করে কালিম্পং কিংবা ডুয়ার্সের সমতলে শীতের শুরুতেই ভালুকের আনাগোনা নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল উজ্জ্বল ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন “আমার ধারণা বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পাহাড়ে জলের সংকট বেড়ে যাওয়ার দরুন তৃষ্ণা মেটাতে ভালুকরা সমতলে চলে আসছে। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে গবেষণার প্রয়োজন।” মাঝেরডাবরি চা বাগানের ম্যানেজার চিন্ময় ধর জানিয়েছেন, “চা বাগানটির ভৌগোলিক অবস্থান বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প সংলগ্ন হওয়ার দরুন আখছার হাতি ও লেপার্ডের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু চা বাগানে আস্ত ভালুকের দেখা মেলায় আমরা উদ্বিগ্ন।” বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প পশ্চিমের উপক্ষেত্র অধিকর্তা প্রবীণ কাসোয়ান জানিয়েছেন, “প্রশাসনের সহযোগিতায় সাফল্যের সঙ্গে কোনও রকম বিপত্তি ছাড়াই ভালুকটিকে উদ্ধার করা গেছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর ফের সেটিকে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।”