বসিরহাট: জীবিত থেকেও সরকারি খাতায় মৃত তকমা, যার জেরে বার্ধক্য ভাতা থেকে বঞ্চিত কৃষক সহিদুল মণ্ডল। এমনই আজব দৃষ্টান্তের সাক্ষী হল বাদুড়িয়া। অভিযোগের তির উপপ্রধানের দিকে।
বসিরহাটের বাদুড়িয়া ব্লকের যদুরহাটী উত্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের পিঙ্গলেশ্বর গ্রাম। সেই গ্রামেরই বাসিন্দা বছর ৭১-র সহিদুল মন্ডল, পেশায় কৃষক। বিগত ১০ বছর ধরে তিনি তাঁর বার্ধক্য ভাতা যথা সময়ে পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাঙ্কের থেকে পঞ্চায়েত অফিস, সব জায়গায় ঘোরাঘুরির পরেও কোনও ফল হয়নি সহিদুলের। অবশেষে তিনি বাদুড়িয়া বিডিও অফিসের নোডাল অফিসারের সাথে যোগাযোগ করায় জানতে পারেন, বার্ধক্য ভাতার যে তালিকা রয়েছে সেই তালিকায় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে এবং সেখানে তাঁকে মৃত বলে আখ্যা দিয়েছেন স্বয়ং বর্তমান যদুরহাটী উত্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জাইদুল হক বৈদ্য।
আরও পড়ুন: Bhatpara Arjun Singh: ভাটপাড়ার অশান্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা
সহিদুলের অভিযোগ, তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করার যে তালিকা রয়েছে তাতে সই করেছেন যদুরহাটী উত্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জাইদুল। যে কারণেই তাঁর বার্ধক্য ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান তিনি। এই ঘটনার কথা স্বীকার করে নেন উপপ্রধান এবং তিনি বলেন, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেও এটা হতে পারে। অন্যদিকে এব্যাপারে যখন বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান কনকলতা মণ্ডলকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, যে সময় জাইদুল হক এই কাজটি করেছিলেন সেই সময় কনকলতা নিজে শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটিতে ছিলেন এবং সেই সময় পঞ্চায়েতের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ছিলেন বর্তমানের উপপ্রধান জাইদুল হক বৈদ্য। যা করার তিনিই করেছেন। তিনি আরও বলেন, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যাপারটি সম্পর্কে অবগত করেছি। চাইবো যত দ্রুত সম্ভব ওই ব্যক্তির বার্ধক্য ভাতা যেন চালু হয়। সহিদুল বিষয়টি নিয়ে বাদুড়িয়ার বিডিও, উত্তর ২৪ পরগণার জেলাশাসক, বাদুড়িয়ার বিধায়ক, যদুরহাটী উত্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ বাদুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকেও এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।
দিন আনা দিন খাওয়া বৃদ্ধ কৃষক সহিদুলের কাছে এই বার্ধক্য ভাতা ছিল পরম প্রাপ্তির। কিন্তু দীর্ঘ ১৬ মাস তা বন্ধ হয়ে থাকায় যথেষ্ট অসুবিধায় পড়েছে তাঁর পরিবার। তিনি চান অবিলম্বে যেন তার মৃতের তকমা উঠে গিয়ে তাকে জীবিত ঘোষণা করা হয় এবং তার বার্ধক্য ভাতা যেন পুনরায় যেন চালু হয়।