Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
যৌক্তিকতা হারাচ্ছে কংগ্রেস!
দেবাশিস দাশগুপ্ত Published By: 
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩ জুন, ২০২১, ০৯:২৩:২৮ এম
  • / ৬২৮ বার খবরটি পড়া হয়েছে

বহু বছর আগে এক প্রবীণ সাংবাদিক মজা করে বলেছিলেন, কংগ্রেসটা না থাকলে আমাদের জীবনটাই মরুভূমি হয়ে যেত। সেটা আজ থেকে তিরিশ পঁয়ত্রিশ বছর আগের কথা। তখনও কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল গড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তলে তলে প্রস্তুতি চলছিল। প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা সিপিএমের বি টিম বলে প্রচার চালাচ্ছিলেন তৎকালীন রাজ্য যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা।
১৮৮৫ সালে জন্মলগ্ন থেকেই কংগ্রেসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে। সব রাজ্যেই কংগ্রেসের নানা গোষ্ঠী ছিল, আজও আছে। ইন্দিরা গান্ধী কংগ্রেসের সর্বেসর্বা হওয়ার পর থেকে জাতীয় কংগ্রেসে গোষ্ঠী রাজনীতি আরও প্রকট হয়েছে। রাজ্যে রাজ্যেও তার ছোঁয়া লাগে। পশ্চিমবঙ্গ। কংগ্রেসও তার ব্যতিক্রম ছিল না। সেই বিধান রায়ের আমল থেকে শুরু করে এই সেদিন পর্যন্ত রাজ্য কংগ্রেসে নানা গোষ্ঠী ছিল। গোষ্ঠী রাজ্য কংগ্রেসে আজও আছে। কিন্তু আসল কথাটা হল, কংগ্রেসটাই নেই। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটের ফলাফলেই বোঝা গিয়েছে, শতাব্দী প্রাচীন এই দলটার অবস্থা কতটা সঙ্গীন। এই প্রথম রাজ্য বিধানসভায় কংগ্রেসের একজন প্রতিনিধিও নেই। নেই বাম দলগুলিরও কোনও প্রতিনিধিত্ব। স্বাধীনতার পর এই প্রথম এই ধরনের একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হল।
যে প্রবীণ কংগ্রেস নেতার কথা বলে এই প্রতিবেদন শুরু করেছি, তিনি বলতেন, কংগ্রেস হল কাঁকড়ার দল। কাঁকড়া যেমন অন্য কাঁকড়াকে ওপরে উঠতে দেয় না, টেনে নামায়। কংগ্রেস দলটাও তেমনই। কোনও নেতা উপরে উঠতে গেলেই অন্য নেতারা তাঁকে টেনে নীচে নামিয়ে আনেন। এই করতে করতেই আজ সারা দেশেই কংগ্রেসের হাল অত্যন্ত খারাপ হয়ে গেছে। তা না হলে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর দু’বছর কেটে গেলেও আজ পর্যন্ত দলের কোনও স্থায়ী সভাপতি হল না? সেই যে রাহুল গান্ধী পরাজয়ের দায় স্বীকার করে সভাপতির পদ ছেড়ে দিলেন, তার পর আজ পর্যন্ত স্থায়ী সভাপতি করা গেল না কাউকে। এখনও সোনিয়া গান্ধীকেই অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে! কথা ছিল, জুন মাসে সভাপতি নির্বাচন হবে। কিন্তু করোনার কারণে তাও ফের পিছিয়ে যেতে পারে। ফলে আপাতত অসুস্থ শরীর নিয়েও সোনিয়াকেই সভাপতির কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
এই সাংগঠনিক দুর্বলতার মধ্যেও কিন্তু কংগ্রেসে গোষ্ঠী কাজিয়া থেমে নেই। দলে গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো চেয়ে ২৩ জন নেতা বছর খানেক আগে সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁরা দলে নির্বাচিত সভাপতি চেয়েছিলেন। তা নিয়ে অনেক নাটক হয়েছে। এখন তাঁরাও চুপ মেরে গিয়েছেন।
গত শতাব্দীর শেষের দিকে আমরা পেশার খাতিরে কংগ্রেসের কম গোষ্ঠিবাজি দেখিনি। সোমেন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি, তারও আগে বরকত গনি খান, প্রণব মুখোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়, অজিত পাঁজা, অশোক সেন, ভোলা সেন, সকলেরই প্রায় আলাদা গোষ্ঠী। প্রায়ই তাঁদের অনুগামীদের মধ্যে মারামারি লেগে থাকত। তখন কংগ্রেসের রাজ্য অফিস ছিল হাজি মহম্মদ মহসিন স্কোয়ারে। ওই অফিসে আমরা কত হাঙ্গামা, মারামারি দেখেছি। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সঙ্গে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর মারামারি, বোমাবাজি কী না হয়েছে। ১৯৯৬ সালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র কয়েকজন সমাজবিরোধীকে বিধানসভা ভোটে টিকিট দিয়েছেন, এই অভিযোগে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি গলায় চাদর দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেন। তার বছর দুয়েকের মাথায়ই মমতা তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন। তারপর তো সব ইতিহাস। বিরোধী নেত্রী হিসেবে তাঁর উত্থান। বলতে দ্বিধা নেই, মমতাকেও পিছন থেকে বার বার টেনে ধরা হয়েছিল, যাতে তিনি নেতৃত্বের সামনের সারিতে চলে আসতে না পারেন। আজ জাতীয় রাজনীতিতে মমতাই বিরোধীদের প্ৰধান মুখ হয়ে উঠতে চলেছেন।
যাইহোক, সেটা অন্য প্রসঙ্গ। কথা হচ্ছিল কংগ্রেসের হালচাল নিয়ে। শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেসের সংগঠনে বড় ধরনের রদবদল হতে চলেছে। অন্তত ১২টি রাজ্যে সভাপতি বদল করে হতে পারে। কেন্দ্রীয় স্তরেও অনেক অদলবদলের ইঙ্গিত রয়েছে। বিক্ষুব্ধ কয়েকজন নেতাকে বড় দায়িত্ব দিয়ে দলের অন্দরে বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা হবে।
প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি রাজ্য কংগ্রেসও অদলবদল হবে? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অধীর চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়া হবে? গত ২০ বছরে অন্তত সাতবার প্রদেশ সভাপতি বদল করা হয়েছে। তাতে আখেরে সংগঠনের কোনও লাভ হয়নি। বিধানসভার আসন এবং ভোট শতাংশে ক্রমশই কংগ্রেস পিছিয়ে পড়ছে, রাজ্য রাজনীতিতে দলটা একেবারে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে।
আসলে কংগ্রেস দলটাই হচ্ছে দিল্লি নির্ভর। হাইকমান্ড নামে একটি বায়বীয় বস্তু আছে এই দলটার। কিছু হলেই কংগ্রেসের রাজ্য শাখাগুলি দিল্লি বা হাইকমান্ডকে দেখিয়ে দেয়। প্রদেশ কংগ্রেস কমিটিগুলির স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই। যেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হন না কেন, তাঁকে দিল্লির হাতের পুতুল হয়ে থাকতে হয়। এই তো বছর তিনেক আগের কথা। অধীর চৌধুরী ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্রকে আচমকাই সভাপতি ঘোষণা করে দেওয়া হল। তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে প্রথম জানতে পারেন যে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হচ্ছেন।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই দলটার কী দূরবস্থা, দেখুন। একেবারে অভিভাবকহীন। দু’বছর ধরে কংগ্রেসের স্থায়ী সভাপতি নেই। অসুস্থ শরীরে সোনিয়া কতদিন চালাবেন, কে জানে। দলের সেই গান্ধী পরিবারের দিকেই তাকিয়ে আছে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

রায়বরেলি থেকে প্রার্থী রাহুল, জানাল কংগ্রেস
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, রাজভবনে মোদি
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
শ্লীলতাহানির অভিযোগের পিছনে চক্রান্ত দেখছে রাজভবন
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
কয়েক মিনিটের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ সুন্দরবনের কয়েকটি ব্লক
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমাকে বয়কটের সিদ্ধান্ত রাজ্যপালের
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
বানানো ঘটনা নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নই: রাজ্যপাল
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
কোভিশিল্ড বিতর্কের মধ্যেই ভ্যাক্সিন সার্টিফিকেট থেকে উধাও মোদির ছবি
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রাজভবনের অস্থায়ী কর্মীর
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
বিজেপির সুভাষের বিরুদ্ধে নির্দলে মনোনয়ন পেশ দলীয় নেতার
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
আইএএস, আইপিএস অফিসারদের বিজেপির হয়ে কাজ করতে চাপ, অভিযোগ মমতার
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে উত্তেজনা তমলুকে
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
তীব্র তাপপ্রবাহ, আলিপুরদুয়ারে খেতে শুকোচ্ছে সবজি
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
দল নির্বাচন নিয়ে কী যুক্তি দিলেন রোহিত-আগরকর?
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team