করোনার জন্য এটিকে মোহনবাগানের পর পর তিনটি ম্যাচ স্থগিত হয়ে গেছে। এর পর আগামি রবিবার তাদের ম্যাচ দেওয়া হয়েছে ওড়িশা এফ সি-র সঙ্গে। এই ম্যাচটি ছিল গত ৮ জানুয়ারি। সেটা স্থগিত হয়ে যায়। তার পর বেঙ্গালুরু এফ সি এবং কেরল ব্লাস্টার্সের সঙ্গে ম্যাচ দুটিও স্থগিত হয়ে গেছে। মোহনবাগান আই এস এল-এর শেষ ম্যাচ খেলেছে হায়দরাবাদ এফ সি-র সঙ্গে। ৫ জানুয়ারি সেই ম্যাচটি ২-২ ড্র হয়েছিল। তার পর তিনটে ম্যাচ খেলা স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর রবিবার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে রাত সাড়ে নটায় মোহনবাগানের খেলা।
কোভিডের জন্য মোহনবাগানের ম্যাচ বাতিল হয়ে যাওয়ায় মোহনবাগানের সুবিধে হয়েছে কি হয়নি তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। তবে রবিবারের ম্যাচে মোহনবাগান তাদের সেরা ফুটবলারদের পাবে। যেমন রয় কৃষ্ণ, সন্দেশ ঝিঙ্গন, কার্ল ম্যাকহিউ ডেভিড উইলিয়ামসদের তো পাওয়া যাবেই ভারতীয়দের মধ্যে শুভাশিস বসুকেও পাওয়া যাবে। তবে চারটি হলুদ কার্ড দেখায় হুগো বুমোকে রবিবারের ওড়িশা ম্যাচে পাওয়া যাবে না। মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফের্নান্দো আক্রমণাত্মক ফুটবলে বিশ্বাসী। বুমো না থাকায় তাঁর সমস্যা হবেই। কারণ বুমো শুধু নিজে পাঁচটি গোলই করেননি। তাঁর অ্যাসিস্ট থেকে একাধিক গোলও হয়েছে।তবে বুমোর অভাব যেমন অনুভূত হবে তেমনি মোহনবাগানে গোল করার লোকের অভাব নেই এটাও বলতে হবে। বিশেষ করে উইঙ্গার লিস্টন কোলাসো নিয়মিত গোলের মধ্যে রয়েছেন। গোয়ার বিরুদ্ধে তিনি যে গোলটি করেছেন সেটা এবারের লিগের অন্যতম সেরা। সব মিলিয়ে পাঁচটি গোল করা হয়ে গেছে তাঁর। ভারতীয়দের মধ্যে এখন পর্যন্ত তিনিই সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন। মনবীর সিং-এর উপর বিশেষ আস্থা আছে কোচ জুয়ান ফেরান্দোর। কিন্তু মনবীর এবার তেমন গোল করতে পারেননি। মোহনবাগান খেলেছে নয়টি ম্যাচ। এখনও তাদের এগারোটি ম্যাচ বাকি। এর মধ্যে মনবীর তাঁর ফর্ম ফিরে পান কি না তাই দেখার।
বুমো না থাকায় মোহনবাগান কোচ শুরু থেকেই রয় কৃষ্ণ এবং ডেভিড উইলিয়ামসকে নামাতে পারবেন। এবার উইলিয়ামস তেমন সুযোগ পাচ্ছিলেন না। তবে হায়দরাবাদ ম্যাচে শুরু থেকে তাঁকে নামান জুয়ান এবং উইলিয়ামস মাত্র ১২ সেকেন্ডে গোল করে রেকর্ড করেন। রয় কৃষ্ণ এবং ডেভিড উইলিয়ামস এক সঙ্গে পাশাপাশি খেলে প্রচুর ম্যাচ জিতিয়েছেন মোহনবাগানকে। এবার এখন পর্যন্ত তাঁরা শুরু থেকে একটি ম্যাচও খেলেননি। ওড়িশা ম্যাচে সে রকম সম্ভাবনা আছে। বুমো না থাকায় গেমমেকারের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে জনি কাউকোকে। ফিনল্যান্ডের জাতীয় দলের এই তারকাকে বহু ব্যয়ে নিয়ে এসেছে মোহনবাগান। তবে এখন পর্যন্ত তিনি সেভাবে দলকে সাহায্য করতে পারেননি। বুমোর অনুপস্থিতিতে মোহনবাগান একটু বেশি করেই তাকিয়ে জনি কাউকোর দিকে। ডিফেন্সে প্রীতম কোটাল এবার খুব ভাল খেলতে পারছেন না। সন্দেশ ঝিঙ্গন ফিরে এসেছেন ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব থেকে। তিনি ম্যাচ ফিট কি না তা এখনও জানা যায়নি। তবে ম্যাচ ফিট হয়ে গেলে তিরির পাশে সন্দেশকে দেখা যাবে। তখন প্রীতম চলে যাবেন রাইট ব্যাকে। আদতে তিনি তো রাইট ব্যাকের প্লেয়ার। সেন্টার ব্যাকে তেমন প্লেয়ার না থাকায় প্রীতমকে সেই জায়গায় খেলতে হচ্ছে। নিজের জায়গায় ফিরলে প্রীতম মন হয় পুরনো ফর্মেই খেলতে পারবেন।
সমস্যা আছে আরও এক জায়গায়। সেটা হল অমরিন্দরের ফর্ম। এই গোলকিপারের কাছ থেকে যা চাওয়া হচ্ছে তিনি তা দিতে পারছেন না। তাই মোহনবাগান সুব্রত কুমার পালকে সই করাতে চায়। সুব্রত টিম হোটেলে যোগ দিয়ে নিভৃতাবাসে আছেন। ওড়িশা ম্যাচের আগে তাঁর সই হওয়ার কথা। তবে আপাতত অমরিন্দরেরই আস্থা রাখতে চান জুয়ান। এখন দেখার অমরিন্দর তাদের ওড়িশা ম্যাচ উতরে দিতে পারেন কি না। না হলে আবার সুব্রতের উপর ভরসা করতে হবে।