হাতি দলবদ্ধ জীব। তাদেরও দুঃখ, কষ্ট, শোক রয়েছে। শুধু মুখ ফুটে তা প্রকাশ করতে পারে না। এরকমই নজির দেখা গেল জলপাইগুড়ির বৈকণ্ঠপুরে। মৃত সন্তানের দেহ আগলে শোকসভা পালন করল হাতির দল। একদিন, দুদিন নয় পরপর তিনদিন ধরে মৃত হস্তিশাবককে ঘিরে রেখেছিল হাতির দল। জলপাইগুড়ির বৈকন্ঠপুর বন বিভাগের তিস্তা নদীর গৌরিকোন এলাকায় এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন গ্রামবাসীরা। সেখানকার নদীর চরে বাদাম, ভুট্টা আবাদ করেন চর এলাকার বাসিন্দারা। তা খেতে প্রায়ই হাতির দল হানা দেয় চর এলাকায়। পেটপুরে খাওয়া দাওয়া করে তাঁরা আবার ফিরে যায় জঙ্গলে। হঠাৎই ছন্দপতন। দু-তিনদিন ধরে গ্রামবাসীরা লক্ষ্য করেন, একপাল হাতির দল ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে নদীর চরে। তাঁদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা খবর দেয় বনবিভাগের কর্মীদের। তাঁরা এসে দলটিকে দুভাগে ভাগ করে দেয়। এক ভাগ বৈকন্ঠপুর এবং আরেক ভাগ কাঠামবাড়ির জঙ্গলের দিকে সরে গেলে বেরিয়ে আসে এক হস্তিশাবকের মৃতদেহ। তখনই ব্যাপারটা পরিস্কার হয় বন দফতরের কর্মীদের কাছে। সেখানকার এক কর্মী জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, তিনদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই স্ত্রী হস্তিশাবকটির। আনুমানিক চার বছর বয়সী হস্তিশাবকটির বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে হস্তিশাবকের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।সেই রিপোর্ট এলে নদীর চরেই দেহটি সৎকার করা হবে বলে জানানো হয়েছে বন দফতরের তরফে। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সন্তানের আকষ্মিক মৃত্যু মেনে নিতে না পেরেই দাড়িয়েছিল হাতির দলটি। প্রায়ই দেখা যায়, দলছুট হয়ে গেলে তারা কোনও হাতিকে দলে নেয় না কিংবা একজনকে আক্রমণ করা হলে খবর পেলে পুরো পাল হাজির হয়। সবসময় দল বেঁধেই থাকে তারা। এক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।