কলকাতা: টেস্ট বাড়তেই রাজ্যে ফের বাড়ল দৈনিক করোনা সংক্রমণ (Corona)৷ সোমবার বুলেটিন অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬০৭৮। টেস্ট হয়েছিল ৩১ হাজার ৩০টি। পজিটিভিটি রেট ছিল ১৯.৫৯ শতাংশ। টেস্ট বাড়তেই এক ধাক্কায় প্রায় ৩ হাজার বাড়ল আক্রান্তের (Covid-19 Third Wave) সংখ্যা। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় স্যাম্পল টেস্ট বেশি হওয়ায় পজিটিভিটি রেট সামান্য কমেছে।
২৫ ডিসেম্বরের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলায় করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় ৯ হাজার ৭৩ জন (Covid Bengal) করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ টেস্ট হয়েছে ৪৭ হাজার ৮৬৪টি। অর্থাৎ, ১৬ হাজার করোনা টেস্ট বেশি হওয়ায় আক্রান্ত বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার। একই সঙ্গে পজিটিভিটির রেট দাঁড়িয়েছে ১৮.৯৬ শতাংশ৷ গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ১৬ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে৷
কলকাতায় একদিনে ৪ হাজার ৭৫৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৫ জন। আক্রান্তের নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে একদিনে ১৩৯১জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত হয়েছে এই জেলায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৩ জনের। এরপরেই রয়েছে হাওড়া জেলা৷ এই জেলায় ২৪ ঘণ্টায়৬৯৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। হাওড়ায় একদিনে ২ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। বীরভূমে ৪ করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
আরও পড়ুন: Covid-19 Third Wave: চরিত্র পাল্টে ৪ গুণ সংক্রমণ ছড়াচ্ছে করোনা, উদ্বেগ ওমিক্রন নিয়েও
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের মেট্রো শহরগুলির মধ্যে পজিটিভিটি রেটে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। কলকাতায় সাপ্তাহিক পজিটিভিটি রেট ৩৮.৩৭ শতাংশ। কলকাতা ছাড়াও বাংলার চার জেলার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। হাওড়ায় পজিটিভিটি রেট ২২.৩০ শতাংশ, পশ্চিম বর্ধমানে ১২.৬৬ শতাংশ, উত্তর ২৪ পরগনায় ১০.৬৫ শতাংশ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পজিটিভিটি রেট ১০.১৮ শতাংশ।
সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার থেকে বাংলায় বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। পুরসভা সহ সমস্ত সরকারি অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ হচ্ছে। সমস্ত সুইমিং পুল, স্পা, জিম, বিনোদনমূলক পার্কও বন্ধ। রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা কার্ফু জারি থাকছে। রাত ১০টার পর শপিং মল, সিনেমা হল বন্ধ রয়েছে। মলে, হলে ৫০ শতাংশ মানুষ প্রবেশ করতে পারছেন না। মাস্ক না পরলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Covid-19 Third Wave: তৃতীয় ঢেউ এসেছে, এখনই সতর্ক হন, না হলে সামনে বিপদ, বলছেন চিকিৎসকেরা
চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার, অভিজিৎ চৌধুরী, অতিমারি বিশেষজ্ঞ যোগীরাজ রায় এবং চিকিৎসক কুণাল সরকারদের পরামর্শ, তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার একমাত্র উপায় জমায়েত বন্ধ করা। একইসঙ্গে বাড়ির বাইরে বেরোলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। এই দুইয়ের সঙ্গে দূরত্ববিধি মেনে চললে এই ঢেউ আটকানো সম্ভব। আজ, মঙ্গলবার থেকে আগামী ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে এই ভ্যারিয়েন্ট কতটা ক্ষতিকর এবং সংক্রামক তা বোঝা যাবে।