Placeholder canvas
কলকাতা বুধবার, ০৭ মে ২০২৫ |
K:T:V Clock
হারিয়ে গেল বঙ্গ রাজনীতির এক বর্ণময় চরিত্র
দেবাশিস দাশগুপ্ত Published By:  • | Edited By: সাহাজান পুরকাইত
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৫ নভেম্বর, ২০২১, ০১:০১:২১ এম
  • / ৬৬৭ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By: সাহাজান পুরকাইত

কলকাতা: বঙ্গ রাজনীতির একটি বর্ণময় চরিত্র হারিয়ে গেল কালীপুজোর রাতে। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একটি তরতাজা তরুণকে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় বেছে নিয়েছিলেন মন্ত্রী হিসেবে। অত অল্প বয়সে কেউ মন্ত্রী হতে পারেন, কারও ভাবনায় ছিল না। তাও আবার যে সে মন্ত্রী নন। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। ছিলেন সিদ্ধার্থ মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও। অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর। বস্তুত ছাত্র পরিষদের নেতা হিসেবে সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি ছিলেন দারুণ জুটি। বলা যায়, তাঁদের সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণেই সত্তরের দশকে কংগ্রেস রাজ্যের ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল। প্রিয়রঞ্জন প্রায় দশ বছর মৃতপ্রায় হয়ে বেঁচেছিলেন। অবশেষে তাঁর মৃত্যু হয়। প্রিয়’দার মৃত্যুটা অত শোকাবহ ছিল না। কারণ, দীর্ঘ কয়েক বছর তিনি অচেতন হয়েই ছিলেন। কাছের মানুষরা মন থেকেই চাইছিলেন, তিনি চলে যান। আর কত কষ্ট পাবেন অত প্রাণবন্ত মানুষটা। সুব্রত’দার হার্টের সমস্যা ছিল। ছিল অন্যান্য রোগও। শুনেছি, অনেক আগেই তাঁর হৃদরোগ ধরা পড়েছিল। কিন্তু ভয়ের চোটে তিনি অপারেশন করাতে চাননি। এবার সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। স্টেন্ট বসানোর পর ভালোই ছিলেন। দু’একদিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার কথা ছিল। ছুটি পেলেন। হাসপাতাল থেকে বাড়ি আসার জন্য নয়। চিরদিনের মতো ছুটি পেয়ে গেলেন।

 সত্তরের দশকে প্রিয়-সুব্রত জুটি ছিল অপ্রতিরোধ্য। রাজ্য কংগ্রেসে বরাবরই নানান গোষ্ঠী ছিল। প্রিয়-সুব্রতর বিরোধী ছিল সোমেন মিত্র গোষ্ঠী। এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বিরোধ বেঁধেছে। একটা সময় সুব্রত ছিলেন বরকত গনি খান চৌধুরীর অনুগামী। পরবর্তীকালে তিনি বরকতের বিরোধী হয়ে ওঠেন। কেউ কেউ সেই সময় সুব্রতকে প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে প্রচার করতেন। তিনি যখন বরকত বিরোধী হন, তখন সোমেন মিত্র ধীরে ধীরে বরকতের লোক বনে যান। শোনা যায়, ইন্দিরা গান্ধী সুব্রতকে দিল্লির রাজনীতিতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কখনও দিল্লিতে থিতু হতে চাননি। সুব্রত নিজে একাধিকবার সেই গল্প করেছেন বিধানসভার লবিতে। 

তীব্র কমিউনিস্ট বিরোধী হলেও সুব্রতর সঙ্গে জ্যোতি বসু সহ বহু সিপিএম নেতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এর জন্য দলের ভিতর থেকেই তাঁকে তরমুজ অপবাদ পর্যন্ত সহ্য করতে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন প্রয়াত জ্যোতি বসুও তাঁকে খুব পছন্দ করতেন। বিধানসভায় দুজনকে বিভিন্ন সময়ে ঠেস দিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। একে অপরকে খোঁচা দিতে কসুর করতেন না। আবার বিধানসভা কক্ষ থেকে বেরিয়েই সুব্রত আড্ডা দিতে চলে যেতেন জ্যোতিবাবুর ঘরে। সুব্রত কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসির রাজ্য সভাপতি ছিলেন বহুকাল। তা নিয়েও কংগ্রেস এবং শ্রমিক সংগঠনের অন্দরে কম বিতর্ক হয়নি। শ্রমিক নেতা হিসেবে তিনি নানা সময়ে বাম শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যৌথ আন্দোলন করেছেন। এমনকি কংগ্রেসের নীতির বিরুদ্ধে গিয়েও তিনি আইএনটিইউসির ব্যানারে আন্দোলন করেছেন। তাতে তাঁকে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে। কিন্তু সেসব খুব একটা গায়ে মাখতেন না সোজা সাপ্টা মানুষ সুব্রত মুখোপাধ্যায়। জরুরি অবস্থার সময় তিনি সিদ্ধার্থ মন্ত্রিসভার তথ্য সংস্কৃতি এবং স্বরাষ্ট্র বা পুলিশ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তথ্যমন্ত্রী হিসেবে তখন তাঁর দায়িত্ব ছিল, কোন কাগজে কী খবর যাবে বা যাবে না, তা ঠিক করা। পরবর্তীকালে একাধিকবার তিনি সাংবাদিকদের কাছে তা নিয়ে আক্ষেপ করেছেন এবং সিদ্ধার্থবাবুর সমালোচনা করেছেন। কংগ্রেস করেছেন, কংগ্রেস ছেড়েছেন, তৃণমূলে গিয়েছেন। কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছেন। আবার একই সঙ্গে তৃণমূলের টিকিটে জিতে কলকাতার মেয়র হয়েছেন সুব্রত। তবে কলকাতার মেয়র হিসেবে একাধিক সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি সত্ত্বেও। এর জন্য তাঁকে তোপেও পড়তে হয়েছে। কিন্তু স্পষ্ট বক্তা সুব্রত তাকেও আমল দেননি। 

আরও পড়ুন-‘সুব্রতদার দেহ আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়’, মন্ত্রীর শেষ যাত্রায় থাকবেন না মমতা

অত্যন্ত রসিক ছিলেন সুব্রত’দা। কংগ্রেসের এমএলএ থাকাকালীন বিধানসভার অধিবেশন একেবারে জমিয়ে রাখতেন। বাম জমানায় কতবার যে তিনি সাসপেন্ড হয়েছেন, তার হিসেব নেই। আবার জ্যোতিবাবুর মতোই বিধানসভার স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমের প্রিয় পাত্র ছিলেন তিনি। ঘরোয়া আলোচনায় বহুবার তিনি বলেছেন, জ্যোতিবাবু, হালিমের মতো ভালো মানুষ হয় না। সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডা দিতে খুব ভালোবাসতেন সুব্রত’দা। সেই আড্ডায় মজার মজার কথা হত। খুব হাসাতে পারতেন তিনি। এমন মজার কথা বলতেন, অতি গম্ভীর লোকও হেসে ফেলতেন। আমি গত প্রায় ৩৭ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছি। এই দীর্ঘ সাংবাদিক জীবনে এরকম বর্ণময় রাজনীতিক দেখিনি। আজকাল অনেক রাজনীতিবিদকে দেখেছি, নিজে মোবাইল ফোন ধরেন না। তাঁর ঘনিষ্ঠ কেউ ফোন ধরেন। সুব্রত’দার একটা অদ্ভুত গুণ ছিল, তিনি সব সময় নিজে ফোন ধরতেন। ব্যস্ত থাকলে রিং ব্যাক করতেন। এরকম নেতা আজকাল বিরল। তাঁকে নিয়ে নানা সময়ে নানা বিতর্ক হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাতে তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হারায়নি। সুব্রত মুখোপাধ্যায় সুব্রতই থেকে গিয়েছেন। খবরটা আচমকা পেয়ে প্রথমে ভাবছিলাম, ঠিক শুনছি তো? গত বছর কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র চলে গেলেন। তিনিও হাসপাতালে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। হঠাৎ স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হল সোমেন মিত্রের। একই পরিণতি হল সুব্রত’দারও। তাঁর প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০
১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭
১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪
২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

পহেলগাম হামলার বদলা শুরু, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিন্দুর’
বুধবার, ৭ মে, ২০২৫
বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে ডাক পেলেন না দিলীপ ঘোষ
বুধবার, ৭ মে, ২০২৫
‘ভারতের ইচ্ছাতেই নদীর জল বইবে’, হুঙ্কার মোদির
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
কাটল জট, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর ভারতের
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
কোন কোন জেলায় তাপপ্রবাহ? দেখুন বড় আপডেট
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
বরের সঙ্গে মেট গালার মঞ্চে দেশি গার্ল, নজর কাড়ল তাঁর ড্রেস
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
ক্যাশ নয়, দিন দিন বাড়ছে UPI পেমেন্টের হার! দেখুন রিপোর্ট
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
মাথায় জড়ান ওড়না, মন্দিরে উরফি
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
হু হু করে বাড়ছে iPhone-এর বিক্রি! রিপোর্ট দেখলে চমকে উঠবেন
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
দাদাসাহেব ফালকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা অভিনেত্রী রুক্মিণী
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
আয়ুর্বেদ পর্যটন আধুনিক বিশ্বে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
প্রিমিয়াম পণ্যে ঝোঁক, আর্থিক শ্রীবৃদ্ধির নতুন দিগন্তের পথে ভারত!
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
নিরাপত্তা পরিষদের প্রশ্নে বিপাকে পাকিস্তান, দাবি রিপোর্টে
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
দেশজুড়ে মকড্রিল আগামিকাল, সাইরেন বাজলেই সতর্ক হন
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
ভারতে ‘ফ্লপ’ হলেও বিদেশে বেশি জনপ্রিয় এই ৬ ‘মেড-ইন-ইন্ডিয়া’ গাড়ি
মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team