জলপাইগুড়ি: গত দু’দিনের প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পাহাড়৷ জায়গায় জায়গায় নামছে ধস৷ এর জেরে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন পর্যটকরা৷ পুজোর ছুটি কাটাতে অনেকেই দার্জিলিং, কালিম্পং বেড়াতে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু ধসের ফলে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাড়িসুদ্ধ সেখানেই আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক৷ অনেকে বন্দি হোটেলে৷ মেঘভাঙা বৃষ্টির মধ্যে হোটেলে সময় কাটানো ছাড়া তাঁদের কাছে আর দ্বিতীয় পথ খোলা নেই৷ খারাপ নেটওয়ার্কের জন্য বাড়ির লোকের সঙ্গে কেউ ঠিক মত যোগাযোগ করতে পারছেন না৷ ফলে দুশ্চিন্তায় বাড়ির লোকেরাও৷ তিতিবিরক্ত পর্যটকরা চাইছেন আবহাওয়ার উন্নতি হোক৷ না হলে পুজোর ছুটিটাই মাটি হবে৷
আরও পড়ুন: বাড়ছে তিস্তার গর্জন, পরিস্থিতি সরজমিনে পুলিশ সুপার
গত সোমবার রাত থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হয়েছে গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে৷ তার ফলেই বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমে বিপর্যস্ত পাহাড়৷ সবথেকে খারাপ অবস্থা লাভা থেকে গরুবাথান হয়ে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথ৷ কালিম্পং ও লাভার মাঝে ৯ মাইল এলাকায় রাস্তার উপর প্রচুর সংখ্যায় গাছ উপড়ে পড়ে৷ এছাড়া উপর থেকে খসে পড়ে পাথরের বড় বড় চাঁই৷ যে কারণে গত ১৮ ঘণ্টায় ২৬টি পর্যটকের গাড়ি রাস্তায় আটকে পড়েছে৷ প্রশাসনের তরফে তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে৷ কিন্তু ক্রমাগত বৃষ্টির জন্য রাস্তা পরিষ্কারে সমস্যা হচ্ছে৷
ধসে বিপর্যস্ত পাহাড়ে চলছে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ৷ বুধবার৷ নিজস্ব চিত্র৷
অপরদিকে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম যাওয়ার ১০ নং জাতীয় সড়কে ২৯ মাইল এলাকা জুড়ে ধস নেমেছে৷ সেকারণে গতকালই রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রশাসন৷ তবে সন্ধ্যার পর প্রশাসনের তৎপরতায় রাস্তার একদিক খুলে গাড়ি যাতায়াত শুরু হয়। কিন্তু আজ বুধবার ভোরে ফের ধস নামে সেখানে৷ তার জেরে পুরোপুরি রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়৷ বাংলা-সিকিমের সংযোগকারী মল্লির ব্রিজটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ সেখান থেকে শুধুমাত্র ছোট ছোট গাড়ি যাতায়াত করতে পারছে৷
আরও পড়ুন: ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস উত্তরবঙ্গে, সপ্তাহান্তে শীতের আমেজ রাজ্যে
পাহাড়ে শুধুমাত্র শিলিগুড়ি থেকে রোহিনী রোড হয়ে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা খোলা আছে৷ কিন্তু সুখিয়াপোখরি মানেভঞ্জনের রাস্তা মঙ্গলবার থেকে এখনও বন্ধ৷ কার্শিয়াং-এর বেশ কয়েকটি বাড়ি ধসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে। শুধু কার্শিয়াং লেবং, তাকদা সহ বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রচুর সংখ্যক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি না কমলে আরো বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে৷