আরামবাগ: নবান্নকে না জানিয়ে ডিভিসি (DVC) জল ছাড়ায় রাজ্যের বহু এলাকা প্লাবিত হয়ে গিয়েছে৷ এ নিয়ে ডিভিসির বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)৷ শনিবার প্লাবিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন তিনি৷ তার পর আরামবাগে (Arambagh) দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দেন, ‘এবার ডিভিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইব৷’ পরে নবান্নে (Nabanna) ফিরে হাওড়া, হুগলি, পুরুলিয়ার জেলাশাসকদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তার পর স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ডিভিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে৷
আরও পড়ুন: না জানিয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ কিউসিক জল ছেড়েছে ডিভিসি: মমতা
এদিন আকাশ পথে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলির বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তার পর আরামবাগের পল্লীশ্রী হেলিপ্যাডে নেমে তিনি যান হোরপুরে৷ সেখানকার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন৷ তার পরই মাইক হাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরেন৷ মমতা বলেন, ‘মোট ১ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে।’ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির বন্যা পরিস্থিতির জন্য আগেই ডিভিসিকে দুষেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেছিলেন, ‘এটা ম্যান মেড বন্যা৷’ আজ একই কথা বলেন তিনি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ডিভিসি এখনও ২ লক্ষ কিউসেক জল ধরে রাখতে পারে যদি ওরা ড্রেজিং করে৷ পাঞ্চেত, মাইথন এগুলির গভীরতা বাড়লে বারবার বাংলা এভাবে ভেসে যাবে না৷ সেই সঙ্গে ঝাড়খণ্ড সরকারকেও অনুরোধ করেন যাতে তারা বাঁধগুলো সংস্কার করে৷ সেই সঙ্গে হেমন্ত সোরেন সরকারকে রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করার প্রস্তাব দেন৷
আরামবাগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শনিবার৷ নিজস্ব চিত্র৷
তবে মমতার আক্রমণের কেন্দ্র ছিল ডিভিসি৷ তিনি বলেন, ‘এমন দিন আসবে যখন ডিভিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে হতে পারে৷ বছরে চারবার করে জল আসে তাহলে কী হবে? সব টাকা জলেই চলে যাচ্ছে৷ মানুষ ঘর সারাচ্ছে৷ আবার ভাঙছে৷ ক’বার করে করবে? চাষের জমিগুলো জলে ঢুবে যাচ্ছে৷ ঝাড়খণ্ড সরকারকে বলব আমাদের সঙ্গে বসে পরিকল্পনা করতে৷ আর কেন্দ্র সরকার মাস্টার প্ল্যান করুক আর টাকা দিক৷ কেন্দ্র আর ডিভিসি প্রতিবার জল ছাড়বে আর আমাদের টাকা নিয়ে ইনকাম করবে আর মানুষকে জলে ডুবিয়ে দেবে তা হবে না৷’
আরও পড়ুন: আজ আকাশপথে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে মমতা
জলে নেমে গ্রামবাসীদের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন মমতা৷ শনিবার৷ নিজস্ব চিত্র৷
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ডিভিসি রাত তিনটের সময় রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই জল ছেড়েছে। সব মিলিয়ে সাড়ে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে৷ মমতার কথায়, ‘এটা ক্রাইম৷’ তিনি বলেন, ‘রাত তিনটের সময় সবাই ঘুমাবে না জল আসছে জলে ভেসে যাবে? এটা খুব বড় ক্রাইম৷ আমরা স্ট্রংলি প্রটেস্ট করে চিঠি লিখব৷ ফিরে গিয়ে (নবান্নে) ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে মিটিং করব৷’