ইসলামাবাদ: শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি(Syed Ali Shah Geelani)। সরকারি ভাবে যিনি ছিলেন ভারতের নাগরিক। যদিও নিজেকে মনে প্রাণে পাকিস্তানী মনে করতেন কাশ্মীরের এই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা। সেই হুরিয়ত নেতার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করবে পাকিস্তান(Pakistan)।
চলতি সপ্তাহের বুধবার সন্ধ্যার দিকে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। জামাত-ই ইসলামি কাশ্মীরের সদস্য ছিলেন এই গিলানি। কাশ্মীরের পাকিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ে গড়েছিলেন তেহরিক-ই-হুরিয়ত। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান(Imran Khan)।
টুইট করে সেই শোকবার্তা জানিয়েছেন ইমরান। যেখানে তিনি লিখেছেন, “কাশ্মীরের মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী গিলানির মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। তিনি কাশ্মীরের স্বাধীনতা এবং অধিকারের জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। দখলদার ভারতীয় রাজ্যের দ্বারা তিনি কারাবরণ ও নির্যাতনের শিকার হন কিন্তু দৃঢ়চেতা ছিলেন।”
আরও পড়ুন- ‘পুলিশ ডে’-তেই এল সুখবর! মার্কিন মুলুকে প্রশংসিত লালবাজারের ‘শবর পিতা’
একই সঙ্গে সমগ্র দেশবাসীর পক্ষ থেকে গিলানির পাকিস্তান প্রেমকে স্মরণ করেছেন ইমরান। টুইটারে তিনি আরও লিখেছেন, “আমরা পাকিস্তানে তার সাহসী সংগ্রামকে সালাম জানাই। এবং তার সেই বিখ্যাত উক্তি ‘আমরা পাকিস্তানী এবং পাকিস্তান আমাদের’ সর্বদা স্মরণে রাখি।” গিলানির মৃত্যুর কারণে পাকিস্তানের সকল সরকারি দফতরে ওই দেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে বলে জানিয়েছেন ইমরান খান।
Deeply saddened to learn of the passing of Kashmiri freedom fighter Syed Ali Geelani who struggled all his life for his people & their right to self determination. He suffered incarceration & torture by the Occupying Indian state but remained resolute.
— Imran Khan (@ImranKhanPTI) September 1, 2021
১৯২১ সালে কাশ্মীরের সীমান্ত লাগোয়া বারামুল্লা এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। লাহোরের ওরিয়েন্টাল কলেজে লেখাপড়া করেছেন তিনি। দেশভাগের সময়ে কাশ্মীর পাকিস্তানের অঙ্গ না হওয়ার কারণে আন্দোলন শুরু করেন তিনি। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়েছিল ২০১০ সালে।
আরও পড়ুন- মৌলিক অধিকার দিয়ে গরুকে জাতীয় পশু ঘোষণা করার প্রস্তাব আদালতের
তিন দফায় গিলানি জম্মু কাশ্মীরের বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন। কাশ্মীরের সপোরে কেন্দ্র থেকে ১৯৭২, ১৯৭৭ এবং ১৯8২ সালে বিধায়ক হয়েছিলেন গিলানি। হ্যাট্রিক করা বিধায়কের যথেষ্ট প্রভাব ছিল সমগ্র উপত্যকায়। কাশ্মীরে ভারতীয় সেনা অত্যাচার চালায় বলে আন্তর্জাতিক মহলে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছেন এই হুরিয়ত নেতা। ২০২০ সালে তিনি হুরিয়তের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেন।
Syed Ali Shah Geelani
বুধবার শ্রীনগরের হায়দারপোরা এলাকার বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর বাড়ির চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সমগ্র উপত্যকা জুড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ।