রাত পোহালেই জামাইষষ্ঠী। জামাইদের আদর আপ্যায়নে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন শ্বশুর শাশুড়ি। এই বিশেষ দিনটিতে খাদ্যপ্রিয় বাঙালি, জামাইদের পাত পেরে খাইয়ে দিনটি পালন করে থাকে। এদিন জামাই শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছলে তাঁর সামনে বাংলার কমবেশি প্রতিটি ঘরের শাশুড়ি মায়েরাই একাধিক সুস্বাদু খাবার সাজিয়ে আপ্যায়ন করে থাকেন। আর সেই লোভনীয় খাবারের মেনুতে প্রধান জায়গা দখল করে রুপালি ইলিশ। কিন্তু এবছর পরিস্থিতিটা একটু আলাদা। শাশুড়িদের ইলিশ দিয়ে পাত সাজানো হয়ত অপূর্ণই থেকে যাবে।
ইলিশ ছাড়া জামাইষষ্ঠীর খাদ্য বাহার এককথায় অসম্পূর্ণ। প্রতি বছর এই দিনটি উপলক্ষে খোলাবাজারে সুস্বাদু ইলিশ মাছের চাহিদা অত্যাধিক থাকার পাশাপাশি মাছের জোগানও থাকে পরিপূর্ণভাবে। কিন্তু এই বছর তা হবে না। কারণ একদিকে করোনা আবহে দীর্ঘ লকডাউনের প্রভাবে গণপরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে রয়েছে। অপরদিকে যশের মতো বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দীঘা সহ বিভিন্ন নদী ও সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় মৎস্যজীবীরা মাছ সংগ্রহ করতে পারছেন না নদী বা সমুদ্র থেকে। ফলে ইলিশ মাছ আমদানি কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে খোলাবাজার গুলোতে। এদিকে জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে ইলিশ মাছের অত্যাধিক চাহিদা কিন্তু রয়েই গিয়েছে প্রতিটি বাজারে।
টাটকা মাছ না আসার কারণে বাধ্য হয়েই স্টোরে থাকা মাছ আমদানি করতে হচ্ছে মৎস্য ব্যবসায়ীদের। যার ফলে এবারের জামাইষষ্ঠীতে সাধের টাটকা রুপালি ইলিশের বদলে স্টোরের ইলিশ মাছ দিয়েই জামাইয়ের রসনা পূরণ করতে হবে শাশুড়িদের। এছাড়াও জামাইষষ্ঠীর কারণে এই সময়ে প্রতিবছর সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে সামুদ্রিক ইলিশের চাহিদার পাশাপাশি ব্যাপক পরিমাণে চাহিদা থাকে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পদ্মার ইলিশেরও। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সেই পথও এইবার প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে প্রয়োজন মতো মাছ আমদানি করতে পারছেন না সীমান্তবর্তী এলাকার মৎস্যজীবীরা। যার কারণে ইলিশ মাছের ঘাটতি থেকেই গিয়েছে খোলাবাজারে। যা এরমধ্যেই রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ ফেলতে শুরু করে দিয়েছে গ্রাম বাংলার শাশুড়ি মায়েদের কপালে।