হায়দরাবাদ: সমাজ পুরুষশাসিত। তাই অনেক কিছুই পরিত্যাগ করতে হয় মহিলাদের। সমাজের যাবতীয় নিয়ম কেবলমাত্র পুরুষদের জন্য। আর সেই সমাজেই বোনের ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে যেন নয়া বার্তা দিল নাবালক দাদা।
আরও পড়ুন- বামেরা সংখ্যালঘু হতেই দেশে বেড়েছে দারিদ্রতা, দাবি ইয়েচুরির
বয়স মাত্র দশ বছর। এই বয়সেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে সে বিক্রি করছে পাখির খাবার। নিজামের শহর হায়দরাবাদের ছবি। চারমিনার বা সংলগ্ন মসজিদ চত্বরে অনেক পাখি উড়তে দেখা যায়। অনেকেই পাখি পোষেন বাড়িতে। সেই কারণে পাখির খাবারের বিক্রি খুব একটা খারাপ নয়। তাই সেই পাখির খাবারের ব্যবসা শুরু করেছে ওই ছোট্ট ছেলেটি।
আরও পড়ুন- আকালের অভিযোগ উড়িয়ে টিকাকরণে সাফল্যের দাবি মোদির
নিত্যদিন একটা ফোল্ডিং টেবিলে নানাবিধ পাখির খাবারের পসরা সাজিয়ে দাঁড়াচ্ছেন খদ্দেরের আশায়। কারণ ওই সকল সামগ্রী বিক্রি না করলে টাকা আসবে না। আর টাকা না থাকলে বন্ধ হয়ে যাবে বোনের চিকিৎসা। বোনের শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ রোগ ক্যান্সার। রোগটি রাজার হলেও প্রজাদেরকেও রেয়াত করে না। চিকিৎসা করাতেই হবে। আর সেই চিকিৎসার খরচ রাজা এবং প্রজা সবার ক্ষেত্রেই সমান।
আরও পড়ুন- হিমাচল প্রবেশে বাধ্যতামূলক আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট
রাজার রোগের সঙ্গে লড়াই করতে নিজের শৈশবকে জলাঞ্জলি দিয়েছে ১০ বছরের ছোট্ট ছেলেটি। চোখেমুখে রয়েছে দৃঢ়তা। লকডাউনে বাবার কাজ গিয়েছে। রেশনের ভরসায় বাড়িতে দুই বেলা হাড়ি চড়ছে কোনও রকমে। এরই মাঝে বোনের অসুস্থতা ধরা পরে। সেই ভয়ানক রোগের সঙ্গে পাল্লা দিতে হায়দরাবাদের রাস্তায় পাখির খাবার বিক্রি করা শুরু করেছে ওই ছোট্ট ছেলেটি। কারণ একমাত্র ছোট বোন সাকিনা বেগমের ব্রেন ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে হবে।
আরও পড়ুন- রাজীব গান্ধী খেলরত্নের পর নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের নাম বদলের উঠল দাবি
ভারতে শিশুশ্রম বিরোধী আইন রয়েছে। যা অমান্য করলে কড়া শাস্তির বিধানও রয়েছে। সেই সবকিছুই যেন তুচ্ছ মনে হয় সাকিনার পরিবারের কাছে। টাকা ছাড়া যে সবই অচল তা বিলক্ষণ বুঝেছেন তাঁরা। সাকিনার মা বিলকিস বেগম বলেছেন, “আমরা কারও থেকে কোনও প্রকারের সাহায্য পায়নি। সরকারি টাকায় রেডিয়েশন থেরাপি করানো হয়েছিল। কিন্তু মেডিকেশন খুবই খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই ছেলেকেও উপার্জনের পথে যেতে হয়েছে।”