কলকাতা: যাদবপুরের (Jadavpur University) প্রথমবর্ষের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর (Swapnadeep Kundu) মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে। শুক্রবার ফের চার পড়ুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় তদন্ত কমিটি (Investigation Committee)। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন আবাসিক ছাত্রদের সঙ্গে কথাও বলেন তারা। এদিন তদন্ত কমিটির সদস্যরা ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনেই বৈঠকে বসবেন। ডেকে পাঠানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল সুপারিটেন্ডেন্ট-সহ কয়েকজন আবাসিক ছাত্রদের । তাদের বয়ান নথিবদ্ধ করবেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা না ব়্যাগিং তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুন্ডু অভিযোগ, তিনি মনে করেন ওই ছাত্রাবাসের কয়েকজন আবাসিক তার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ি। 302/34 ধারার অধীনে একটি মামলা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (C. V. Ananda Bose)। তিনি স্বপ্নদীপের পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বোস। সঠিক তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন।বৃহস্পতিবার রাতে স্বপ্নদীপের বাবাকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আশ্বাস দেন পাশে থাকার । কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁকে শাস্তি দেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অন্তত ১০-১৫ জন পড়ুয়াকে। স্বপ্নদীপ মেন হস্টেলের যে বিল্ডিং-এ ঘর পেয়েছিলেন, সেই বিল্ডিং-এর অন্যান্য ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ। এছাড়া হস্টেল খতিয়ে দেখতে রাতেই সেখানে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম) ও ডিসি এসএসডি।
আরও পড়ুন: সোনিয়ার তলব লোকসভার কংগ্রেস এমপিদের, বিষয় অধীর চৌধুরীর সাসপেনশন
অন্যদিকেএই ঘটনার পিছনে কি র্যাগিং রয়েছে? ইউজিসি-র পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে। চিঠি দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটির বৈঠক ডাকতে নির্দেশ। শুক্রবার বিকেলেই যাদবপুরে বসছে অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটির বৈঠক। আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মৃত্যুর ঘটনার নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদের মেইন হস্টেল থেকে অবিলম্বে সরানো হচ্ছে নতুন বয়েজ হস্টেলে। এর পাশাপাশি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, হস্টেলে যাদবপুরের প্রাক্তনী বা বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে রাজ্যপালকেই নিশানা করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ট্যুইটে রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, রাজ্যে দুর্ভাগ্যজনক কিছু ঘটলেই বিজেপি তাতে রাজ্য সরকারের দোষ খোঁজে। এমনকি গাছ থেকে একটা পাতা ঘষলেও তার দায় রাজ্য সরকারের এমনটাই মনে করে বিজেপি। এই যেমন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে যাদবপুরের মর্মান্তিক ঘটনার জন্য রাজ্যকে দোষারোপ করছেন কিন্তু তিনি এটা ভুলে গিয়েছেন যে এই মুহূর্তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সরাসরি রাজ্যপালের উপর। তাই এটা রাজ্যপালের ব্যর্থতা এবং তার রাজনৈতিক প্রভুদের ব্যর্থতা যে তারা এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা আটকাতে পারেননি।