বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে বৈশাখী পূর্ণিমা বা বুদ্ধপূর্ণিমা একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের দিন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, ২৫০০ বছরেরও আগে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথির এই শুভক্ষণে সিদ্ধার্থ গৌতমের ধরাধামে আগমন বা জন্মগ্রহণ, অরহৎ বা বুদ্ধত্বলাভ এবং নির্বাণপ্রাপ্তি বা দেহত্যাগ হয়েছিল। কপিলাবস্তু নগরীর শাক্যমুনি বংশের রাজা শুদ্ধোধন এবং রানী মহামায়ার ঘরে এক পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করেন। যাঁর নাম ছিল সিদ্ধার্ত। খুব ছোট থেকেই তিনি ছিলেন, মানবতাবাদী, অহিংস, আত্মজিজ্ঞাসু একজন সত্যসন্ধানী। জাগতিক ভোগ বিলাসিতায় নিজেকে ভাসিয়ে দেননি তিনি। রাজবংশে জন্মগ্রহণ করেও আয়েশপূর্ণ অবস্থান, অনাবিল সুখ, অপার বিত্ত-বৈভব এবং বিপুল ঐশ্বর্যের বাইরেও শৈশব থেকে তিনি ভাবতেন চারপাশের কথা। হিংসা, শত্রুতা, বৈষম্য ইত্যাদি। তিনিই নিজেকে ব্যাপৃত এবং মানুষের নিজের কৃতকর্মকেই এর মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
আরও পড়ুন: Buddha Purnima | মা লক্ষ্মীকে খুশি করতে বুদ্ধ পূর্ণিমায় করুন এই কাজগুলি, সংসারে উপচে পড়বে ধন-সম্পদ
এই দিনে ভক্তেরা ভোরবেলা উঠে স্নান করে ধ্যান করেন। তাঁদের মতে এই দিনটি যদি তাঁরা পালন করেন তাহলে সব পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এছাড়াও দরিদ্রদের খাওয়ান অনেক মানুষে। প্রতিবছর এই দিনে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় বুদ্ধগয়া-য়।
এদিনভক্তেরা সকালে উঠে স্নান সেরে ঘর পরিষ্কার করে বাড়ির চারিদিকে গঙ্গাজল ছেটান। তার পর ফুল পাতা দিয়ে বাড়ি সাজানো হয়। বাড়ির প্রবেশ দ্বারে হলুদ, রোলি এবং গঙ্গাজল দিয়ে স্বস্তিক চিণ্হ আঁকা হয়, যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি পবিত্র চিহ্ন হিসেবে বিবেচিত। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হয় এবং বৌদ্ধধর্ম অনুসরণকারীরা এই দিনে বুদ্ধগয়া-তে যান। এছাড়াও, বোধি গাছের উপাসনা করা হয়।